রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) ও দুপ্রক রাজবাড়ীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ৯ টায় জেলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবস উদযাপনের কর্মসূচী শুরু হয়। এরপর র্যালী শেষে রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়কে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুনীতিবিরোধী মানববন্ধনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইব্রাহিম টিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিক, সমাজসেবা উপপরিচালক রুবাইয়াত মো. ফেরদৌসসহ শতাধিক মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন । মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক(সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিক এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহিম টিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব, সনাক সভাপতি প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান, দুদক ফরিদপুর জেলা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোস্তাফিজ, দুপ্রক রাজবাড়ী কমিটির সহ-সভাপতি আজিজা খানম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দুপ্রক রাজবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান।
দিবসটি উপলক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে টিআইবি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের বিবেচনার জন্য ১৪টি সুপারিশ প্রস্তাব করছে। তার মধ্যে রয়েছে: মুক্তিযুদ্ধ ও ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রকৃত চেতনার আলোকে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এদেশের সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চয়তাসহ একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, জবাবদিহিমূলক, সুশাসিত, দুর্নীতিমুক্ত, মানবাধিকার-ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ‘‘নতুন বাংলাদেশ’’ বিনির্মাণে উদ্যোগী হতে হবে। ‘‘নতুন বাংলাদেশে’’র মূল চেতনাকে সমুন্নত রাখতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)Ñএর জবাবদিহি নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ-প্রক্রিয়াসহ সংস্থাটির কার্যক্রম দলীয় প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণে দুদকের ক্ষমতাকে খর্ব করে আইনের (সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮; মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২; আয়কর আইন, ২০২৩) এমন সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে। সর্বোপরি, দুদক সংস্কার কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে বাস্তবায়ন করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ এবং এ রূপ সংস্থার গঠন, নিবন্ধন, ব্যবস্থাপনা-প্রক্রিয়া সহজতর করাসহ উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে অবিলম্বে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করতে হবে।