জরাজীর্ণ লঞ্চ ও ফেরি ঘাট দিয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঈদুল-ফিতর উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের যাত্রীদের পারাপার করবে ঘাট সংশ্লিষ্ট। কিন্ত এই নৌরুটে চলাচলরত চালক ও যাত্রীদের আশংকা জরাজীর্ণ লঞ্চ ও ফেরি ঘাটে দুর্ভোগ হবে কয়েকগুণ। তবে বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে ঈদুল-ফিতর উপলক্ষে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রী ও যানবাহন নদী পারাপার করার জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ফেরি সংকট ও উভয় ঘাটের জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকার কারণে দৌলতদিয়া পারে প্রতিদিনের মত আজও প্রায় ৫শতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায়।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক খালেদ নেওয়াজ জানান, স্বাভাবিক সময়ে এই নৌরুটে ১১টি রোরো (বড়), ৫টি ইউটিলিটি (ছোট) ২টি ড্রাম ফেরি ১টি কে-টাইপ সহ মোট ১৯টি ফেরি চলাচল করে। কিন্ত ২টি ইউটিলিটি ফেরি বিকল থাকার কারণে বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পারে ৫টি করে ঘাট সচল থাকবে। ঈদে অতিরিক্ত ফেরি বহরে যোগ হওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ফেরিগুলো রওয়ানা হয়েছে। তবে এখনও বহরে এসে পৌঁছানি।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পোর্ট অফিসার শাহ আলম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চে যাত্রী পারাপার করার জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এই নৌরুটে ২১টি লঞ্চ চলাচল করবে। তবে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সংযোগ সেতু ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বাকী কাজ শেষ হবে।
তবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় পারের লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এই নৌরুটে বর্তমান ১৭টি ফেরি ও ১৬ লঞ্চ চলাচল করছে। পাটুরিয়া পারে ৪টি ফেরি ঘাট সচল রয়েছে। দৌলতদিয়া পারে মাত্র ৩টি ঘাট সচল রয়েছে। বাকী ৪টি ঘাট এখনও পর্যন্ত বিকল রয়েছে। সচল ঘাটগুলোও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, দীর্ঘ ৭ মাস দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট কৃত্রিম অবস্থায় চালানো হয়েছে। তবে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কোন মত জোড়া তালি দেওয়ার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তিনি আরও জানান, যে ভাবে লঞ্চ ঘাট মেরামত করা হচ্ছে এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট সুপারভাইজার মনির হোসেন জানান, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পল্টুনে যে অবস্থা যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ পল্টুনে যে পরিমান কাঁদা ভারি যানবাহনগুলো লোড-আনলোড করতে সমস্যা হয়।
পণ্যবাহী ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় ঘাটের দুর্ভোগের শেষ নেই। এই দুর্ভোগ ঈদে কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। কারণ প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাটে দীর্ঘ যানবাহনের সারি থাকে। ঈদে ঘর মুখি যাত্রীদের আরও দুর্ভোগ হবে। এই নৌরুটের যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে ফেরি বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।