আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবের দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে আমরা অর্জন করি পরম কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।
ঐতিহাসিক এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। আরও স্মরণ করছি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের সকল শহিদ ও জাতীয় চার নেতাকে। সশ্রদ্ধ সালাম জানাই সেসব অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী জনতার প্রতি, যারা দেশমাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়েছেন এবং বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলার মাটিকে হানাদারমুক্ত করেছেন। সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি ত্রিশ লক্ষ শহিদ এবং দুই লক্ষ নির্যাতিতা মা-বোনকে। যারা স্বজন হারিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। আজকের এ দিনে রাজবাড়ী জেলার সকল শহিদ এবং বীরমুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।
স্বাধীনতা বাঙালি জাতির মহত্তম অর্জন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির অনেক রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ স্বাধীনতা। এ অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌছে দিতে হবে। স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া এবং এ দেশের মানুষের উন্নত জীবনযাত্রার সুযোগ তৈরি করা। সে লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে আমাদের সফল অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে ধাপে ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ, সর্বজনীন পেনশন স্কিম ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে অগণিত মানুষকে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি মেগা প্রজেক্টগুলোর সফল বাস্তবায়নের ফলে আজ বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা সমৃদ্ধির পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হবো।
অন্তহীন অনুপ্রেরণা ও গৌরবের এ মাহেন্দ্রক্ষণে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাজবাড়ীবাসীসহ সমগ্র দেশবাসীর সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করছি।
জয় বাংলা।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আবু কায়সার খান
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী।