আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চ। এদিন রচিত হয় ইতিহাসের ভয়াবহতম বর্বরতার অধ্যায়। মধ্যরাতের পূর্বমুহূর্তে ঢাকায় শুরু হয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাকান্ড ও ধ্বংসের তান্ডব। অপারেশন সার্চ লাইট বাস্তবায়নে নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক সেনারা। পাক সেনারা সে রাতে বইয়ে দিয়েছিল রক্তের বন্যা। ঢাকা পরিণত হয়েছিলো লাশের শহরে। শহীদ হন পুলিশ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অগণিত মানুষ।
অস্ট্রেলিয়ার ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকার ভাষ্য মতে শুধুমাত্র ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ২০১৭ সলের ১১ মার্চ ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর থেকেই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এছাড়া এ দিবসটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির জন্য কাজ করছে বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জ্যেষ্ঠকন্যা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
আজকের এই দিনে আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর জন্ম না হলে লাল সবুজের বাংলাদেশ হতো না। তাঁর নেতৃত্বে দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি ২৫ মার্চ কালরাতে রাজারবাগে শহীদ পুলিশ সদস্যসহ সকল শহীদদের। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরঙ্গনা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ সকলস্তরের জনগণকে, যাদের অসামান্য অবদান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জানতে হবে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস ও এর মর্মকথা। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ গঠনের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যেই ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, শান্তিপূর্ণ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী স্মার্ট দেশ আমরা গড়বো ইনশাআল্লাহ্ এই হোক আমাদের আজকের এই দিনের শপথ।
জয় বাংলা, বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।
জি. এম. আবুল কালাম আজাদ, পিপিএম
পুলিশ সুপার
রাজবাড়ী।