এপ্রিলের ৬ তারিখে যুদ্ধে যাত্রা, পরবর্তী বছরের ৬ তারিখে ফিরে আসা। আরেকটি ৬ এপ্রিল পরপারে যাত্রা। জন্ম ও বিবাহের তারিখটাও নাকি ৬ এপ্রিল ছিলো। কি মাহেন্দ্রক্ষণ ছিলো ৬ এপ্রিল তা তিনি নিজেই জানতেন। তবে এবছরের ৬ এপ্রিল রমজানের মাস। তাই এ সময়টি শুভ সময় বলে জানেন ধর্ম প্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় । এমন দিনে পরপারে পারি জমালেন রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন মৃধা।
৭১ এ সারাদেশে যুদ্ধের ডঙ্কা বেঁজে উঠলে ৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন তৎকালীন গোয়ালন্দ মহাকুমারের রাইপুর গ্রামের মসলেম উদ্দিন মৃধা। যুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়ীতে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার ও সেবা প্রদান করতেন। এছাড়া অসহায় সহযোদ্ধাদের নগদ অর্থ দিয়েও সাহায্য করতেন মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন মৃধা।
রাজবাড়ীর বিহারী ক্যাম্প দখল ও কালুখালীর মিলিটারী ক্যাম্প দখল মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন মৃধার জীবনের বীরত্বগাথা দিনগুলো মধ্যে অন্যতম। এ অভিযানের কথা জানাজানি হওয়ায় ওই সময় ঝুঁকিময় হয় তার জীবন। তাই যুদ্ধ শেষ হওয়ার সারে ৩ মাস পর ৬ এপ্রিল বাড়ীতে ফেরেন মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন মৃধা। বাড়ী ফেরার পর তার যুদ্ধকালীন সময়ের কমান্ডার আবু হোসেন সরদারের সাথে মিলেমিশে তিনি এলাকার উন্নয়নের কাজে অংশ নেন। তার চেষ্টায় এলাকায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ, ঈদগাঁ, কবরস্থান সহ সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সবাইকে শোকের সায়রে ভাসিয়ে পরপারে যাত্রা করেন মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন মৃধা (৭৬)। মৃত্যুকালে তিনি ৪ ছেলে, ৩ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।