রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে পীর আব্দুল মতিন নেছারীর বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত হাসান, মানিক ও পিয়াল নামে ৩ জন শুক্রবার বিকালে রাজবাড়ী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুধাংশু শেখর রায়ের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। এরা সকলেই রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা।
জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারী রাত ৮টার দিকে বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন রসুলপুর চার তরিকার পীর আব্দুল মতিন নেছারীর বাড়ীতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ৮-১০ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাতদল কালো রংয়ের মাইক্রোবাস যোগে রসুলপুর পীরের বাসভবনের সামনে গাড়ি থামিয়ে বাড়ীর মূলগেটের সামনে দেশীয় অস্ত্রের মুখে পাহাড়াদারদের জিম্মি করে। পীরের বাড়ীর একটি ঘরে সবাইকে আটক করে রাখে। পরে বাড়ীতে অজ্ঞাতনামা ডাকাতরা প্রবেশ করে দুই তলায় পীরের বেগম ও কাজের মেয়েকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা আলমারী ভেঙ্গে নগদ ৮ লক্ষ টাকা ও বাড়ীর লোকজনের ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
আব্দুল মতিন নেছারীর বাড়ীর খাদেম মো. আইয়ুব আলী বলেন, পীর সাহেব বাড়ীতে ছিলেন না। ওয়াজ মাহফিলের জন্য নাটোরে অবস্থান করছেন। মাগরিবের নামাজ পর আমরা বাইরেই ছিলাম। এমন সময় একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস উঠানে এসে দাঁড়ায়। আমরা ভেবেছি হুজুরের কোন ভক্ত হবে। গাড়ী থেকে ৫-৭ জন মুখোশধারী নেমে আমাদের জিম্মি করে আমাদের ৬-৭ জনের নিকট থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। কয়েকজন বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে হুজুরের শয়নকক্ষ থেকে আলমারী ভেঙ্গে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। ডাকাতরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এ হামলা চালায়। তবে বাড়ির লোকজনের কোন শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি করেনি।
পীরের জামাতা মওলানা আব্দুল্লাহ বলেন, মুখোশধারী ৮-১০ জনের দুর্বৃত্ত দল দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে পীর সাহেবের ঘরে ঢোকে। এসময় বাড়ীতে থাকা অন্যান্য সদস্যদের জিম্মি করে ষ্টিলের আলমারী ভেঙ্গে তার মধ্যে থাকা জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, পীর আব্দুল মতিন নেছারীর জামাতা আব্দুল্লাহ্ বাদী হয়ে গত ১১ জানুয়ারী বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পরই অভিযান চালিয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা হাসান, মানিক, পিয়াল নামে ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে গ্রেপ্তারকৃতরা ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। পরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যান্য আসামী গ্রেপ্তার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।