আজ মহান বিজয় দিবস। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে এবং দখলদার পাকিস্থান সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এবারের বিজয় দিবস এসেছে অধিক তাৎপর্য ও মহিমা নিয়ে। আজ আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করছি সেসব শহীদের আত্মদানকে। স্মরণ করছি বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর ডাকে সর্বস্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন।
১৯৭১ সালের আগে কিংবা পরে বাঙালির জীবনে এমন মুহূর্ত আর কখনো আসেনি, যখন পুরো জাতি অভিন্ন লক্ষ্যে এতটা দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রধান কারণই ছিল সমগ্র জাতির ইস্পাত কঠিন ঐক্য। সেদিন মানুষ কেবল দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করার জন্যই যুদ্ধ করেননি, তাঁদের লক্ষ্য ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা; যেখানে পাকিস্তানি শাসনামলের সব অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটবে; রাষ্ট্র পরিচালিত হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সত্যিকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে; যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব নাগরিক সমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকার ভোগ করেছেন
১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে। গত পাঁচ দশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দারিদ্র্য কমেছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়; কমেছে শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার। গড় আয়ু বেড়েছে, পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে।
আগামী দিনগুলিতে জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা, দারিদ্র ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
কাজী কেরামত আলী
জাতীয় সংসদ সদস্য
রাজবাড়ী-১ আসন