বাঙালি জাতির প্রেরণার অন্যতম উৎস এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে তিনি জাতির মুক্তির জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি জাতির পিতার শুধু সহধর্মিনীই ছিলেন না, ছিলেন তাঁর একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী ও পরামর্শ দাতা। মহিয়সী এ নারী ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল রেণু। ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন দৃঢ় মনোবল ও দূরদর্শী চিন্তা-চেতনার অধিকারী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু’ তথা জাতির পিতা হয়ে ওঠার অন্তরালে যাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য- তিনি হলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন কারাগারে। এ সময়ে পারিবারিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় দলীয় ও সাংগঠনিক বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষায়- “আব্বা যখন জেলে থাকতেন, আমার মা শুধু সংসার, ছেলেমেয়ে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন না। দলের নেতা কর্মীরা আসতেন তাঁর কাছ থেকে দিক-নির্দেশনা নিতে। তিনি তাঁদের সাহস যোগাতেন, পরামর্শ দিতেন। সংগঠন চালানোর প্রয়োজনীয় অর্থও তাঁকেই জোগাড় করতে হত। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পেছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বঙ্গমাতার সে প্রেরণাদায়ী মন্তব্য, “তুমি যা বিশ্বাস কর, তোমার মন যা চায়, তুমি তাই বলবে।” বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে তিনি হয়ে উঠেছিলেন প্রেরণার অনিঃশেষ উৎস।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সঙ্গে তিনিও নির্মম হত্যাকা-ের শিকার হন। ৮ আগস্ট ২০২২ অকুতোভয় ও মহিয়সী এ নারীর ৯২তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর প্রতি রইলো আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা। বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় চেতনাকে আরো শাণিত করেছিলেন বঙ্গমাতা। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জয় বাংলা।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আবু কায়সার খান
জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ী।