রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন

স্বস্তিতে ফিরছে ঘরমুখি মানুষ

শফিকুল ইসলাম শামীম॥
  • Update Time : বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২
  • ১৫৫ Time View

যানজট, দুর্ভোগ ও অসহ্য যন্ত্রণাবিহীন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরি পার হওয়া গেছে এমন বাস্তবতা ৩০ বছরে সম্ভব হয়নি। দুর্ভোগ ও অসহ্য যন্ত্রণা কয়েকগুন বৃদ্ধি পেত ঘন কুয়াশা, নদীতে নাব্যতা ও ঈদ সহ বিভিন্ন উৎসবে। এই যন্ত্রণার সাথে যোগ হতো কৃত্রিম যানজট। আমার ৩০ বছরের এই নৌরুট চলাচলের সময় এত সস্তি নিয়ে কখনও ঘরমুখি হতে পারিনি। কথাগুলো বললেন ঢাকা থেকে যশোরগামী আব্দুল আমীম-(৫৫)। তিনি আরো বলেন, কর্মের কারণে ৩০ বছর যাবৎ ঢাকায় থাকি। সেই সুবাদে ১/২ মাস পর পর যশোর যেতে হয়। তবে এবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের রাজধানী মুখি মানুষের কি উপকারীতায় এসেছে তা নিজের চোখে দেখলাম। এখন প্রতি সপ্তাহে যশোর যেকে পারবো।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় পারে লঞ্চ ও ফেরি ঘাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঈদে ঘরমুখি মানুষ ও যানবাহনের চাপ নেই। যে সকল যানবাহন ও যাত্রী ঘরমুখি হওয়ার জন্য এই নৌরুট ব্যবহার করছে তারা সহজে লঞ্চ ও ফেরি পার হয়ে গন্তব্যস্থানে যেতে পারছে। স্বস্তিতে ঘরে ফিরছে দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখি মানুষ।

কথা হয় ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী বেলায়েত হোসেন নামের এক যাত্রীর সাথে। তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখি হওয়া মানে যুদ্ধে যাওয়া। এই দুর্ভোগের কথা বলে বুঝানো যাবে না। যে এই দুর্ভোগে না পরছে তার কাছে গল্প মনে হবে।

সুলতানা (৪৫) নামের এক নারী যাত্রী বলেন, এই ফেরি ঘাটে নারী ও শিশু যাত্রীদের কি পরিমান দুর্ভোগ হয়েছে আমি নিজে তার উদাহরন। আমার ২ বছরের শিশু বাচ্চা নিয়ে ১৪ঘণ্টা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বসে কাটাতে হয়েছে। অর্থের অভাবে সন্তানের মুখে কিছু দিতে পারিনি। পদ্মা সেতু আমাদের অসহ্য যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আর যেত কোন মায়ের কোলের শিশু বাচ্চা নিয়ে ফেরি ঘাটে অপেক্ষা করতে না হয়।

যাত্রীবাহী বাস গোল্ডেন লাইন পরিবহনের এক চালক বলেন, ফরিদপুর থেকে ঢাকা যেতে যত সময় বা কষ্ট হয়নি তার চেয়ে বেশি সময় ও বেশি দুর্ভোগ হয়েছে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত যেতে। মাত্র সাড়ে ৩কিলোমিটার নৌরুট পারি দিতে বেশি কষ্ট করতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে এখন এই নৌরুটও দুর্ভোগ মুক্ত হয়েছে। এখন এই নৌরুট দিয়ে সস্তিতে ফেরি পারাপার হওয়া যায়।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে কথা হয় ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন এর সাথে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এই নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহনের খরা চলছে। ঈদেও একই রুপ দেখা যাচ্ছে। ঈদের বাকী ৩দিন। এসময় আমরা খাওয়ার সময় পেতাম না। এখন অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখি যাত্রীরা স্বস্তিতে যেতে পারছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজ বলেন, পদ্মা সেতু উপকারিতা দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের মানুষ পেতে শুরু করেছে। ঘরমুখি ও কর্মমুখি মানুষের আর ফেরি ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। ঘাটে এসেই ফেরি পার হতে পারছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com