‘সত্যেন রণেশের আঁকা পদচিহ্ন, লালখামে আমাদের ঠিকানা অভিন্ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে নানা আয়োজনে জেলা উদীচীর নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অন্ষ্ঠুান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা শহরের আজাদী ময়দান সংলগ্ন সংগঠনটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
আয়োজনের মধ্যে ছিল আড্ডা, আলোচনা, গান, কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাজবাড়ী জেলা সংসদের সভাপতি অধ্যাপক শংকর চন্দ্র সিনহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এজাজ আহম্মেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি আজিজুল হাসান খোকা। বিকেল সোয়া ৫ টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অভিষেক অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর পরিবেশন করা হয় সংগঠন সংগীত। শুরুতে সংগঠনের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ফকীর শাহাদাত হোসেনের সদ্য প্রয়াত মায়ের স্মৃতি প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
উদীচী নিয়ে স্মৃতিচারণ ও নিজের অনুভূতি তুলে ধরেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড আবদুস সামাদ মিয়া, জেলা শিল্পকলা একাডেমী একাডেমীর কালচারাল অফিসার আল মামুন বিন সালেহ, রাজবাড়ী থিয়েটারের সভাপতি আসাদুজ্জামান চৌধুরী বাবলা, জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মন্ডল, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি স্বপন কুমার দাস, রাজবাড়ী লেখক-পাঠক কেন্দ্রের সভাপতি কবি নেহাল আহমেদ, মুক্ত আনন্দেও পরিচালক নাট্যকার অজয় দাস তালুকদার, বৈচিত্র্য সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি মো. আজাদ সিদ্দিকী মিলন। এসময় উদীচী ও জেলায় ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংগীত পরিবেশন করেন জেলা উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ দাস, সংগীত বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুল জব্বার, বৈচিত্র্য সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি আজাদ সিদ্দিকী মিলন, উদীচীর দপ্তর সম্পাদক সুমা কর্মকার, মলীনা পারভীন, কানিজ ফাতেমা ও আবদুল আওয়াল প্রমূখ। কবিতা আবৃত্তি করেন জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক উৎসব চক্রবর্তী ও জারা। বক্তারা বলেন, উদীচীর জন্মলগ্ন থেকে সংগঠনটি অধিকার, স্বাধীনতা ও সাম্যের সমাজ নির্মাণের সংগ্রাম করে আসছে। উদীচী ’৬৮, ’৬৯, ’৭০, ’৭১ সালে বাঙালির সার্বিক মুক্তির চেতনাকে ধারণ করে গড়ে তোলে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। এ সংগ্রাম গ্রাম-বাংলার পথে-ঘাটে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালে উদীচীর কর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। দেশের সকল গণতান্ত্রিক, মৌলবাদবিরোধী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে এ সংগঠন বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে সারাদেশে উদীচীর তিন শতাধিক শাখা রয়েছে। রাজবাড়ীতেও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে উদীচী। উদীচীর কণ্ঠরোধ করার জন্য বিভিন্ন সময় অপচেষ্টা করা হয়েছে। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম কওে উদীচী সামনের দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শেষে রাজবাড়ী জেলা উদীচীর দ্বাদশ সম্মেলনে নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের পরিচয় এবং সভাপতির বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।