আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর হে-মার্কেটে দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মসময় ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে শহরের শ্রমিকরা। আন্দোলনরত শ্রমিকদের দমাতে মিছিলে গুলিবর্ষণ করা হলে ১১ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত ও গ্রেপ্তার হন আরো বহু শ্রমিক। তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে এ দিনে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এ দিনটিকে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেশ বিভাগের পূর্বে নারায়ণগঞ্জে মে দিবস পালিত হয় ১৯৩৮ সালে। এরপর থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সীমিত পরিসরে মে দিবস পালিত হতো। তবে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয় লাভ করলে এ দেশে প্রথমবারের মতো বিপুল উৎসাহ নিয়ে শ্রমিকগণ মে দিবস পালন করে। ১৯৫৮ সালে ১ মে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন করার দাবি ওঠে। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রমিক আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা সূচিত হয়। আওয়ামী লীগ ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর শ্রমিকগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মার্চ ১৯৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনকে সমর্থন করে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পেও মে দিবস পালিত হতো। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মে দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে জাতীয় দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আজ শ্রমিকদের উন্নত কর্মপরিবেশ, পেশাগত নিরাপত্তা, সুস্থতা ও ন্যায্য মজুরী নিশ্চিত করতে বন্ধ পরিকর। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হবো।
মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, রাজবাড়ী-এর পক্ষ থেকে সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানাচ্ছি।
জয় বাংলা। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আবু কায়সার খান
জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ী।