সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন

প্রাণের ঊচ্ছ্বাসে পালিত হলো বাংলা নববর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৪৯ Time View

রাজবাড়ীতে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়েছে। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা প্রশাসকের আম্রকানন চত্ত্বরে প্রভাতী সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হয়। পরে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রায় গ্রাম বাংলার নানান কৃষ্টি, ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়।

এদিকে রাজবাড়ী নববর্ষ উদযাপন পরিষদ পৃথকভাবে শহরের আজাদী ময়দানে তিন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে।

এছাড়া মেজবাহ উল করিম রিন্টু স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শহরের বকুলতলায় মেহেদী উৎসব, রম্য বিতর্ক, গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির; কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এ বাংলা সাল। অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোপুরিই একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাদের পুরোনো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি পালিত হয় আজও। মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। এ সময় ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে শুরু হয় বর্ষবরণ। আমাদের মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এ উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com