আজ ১৭ই মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। এই দিনে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। শিশু দিবস উপলক্ষে প্রাণপ্রিয় রাজবাড়ীবাসী, শিশু-কিশোরসহ সম্মানিত সকল নাগরিককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি অত্যন্ত মানব দরদী ও অধিকার আদায়ে আপোসহীন ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধীকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। এ জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তবুও বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপোস করেননি। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। ঐতিহাসিক ভাষণটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ৭ই মার্চের সেই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অর্জন করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্ব-পরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। তবে এখন আনন্দের বিষয় হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও নিরলস পরিশ্রমের কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন, তাতে আগামী ২০৪১ সাল নয়, তার আগেই উন্নত একটি স্মার্ট দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমাদের শিশু-কিশোরদের মধ্যে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদেরকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আমি সকলকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণের আহবান জানাই।
জয় বাংলা, বাংলাদেশ চিরজীবি হোক। শুভ জন্মদিন, জাতির পিতা।
জি. এম. আবুল কালাম আজাদ, পিপিএম
পুলিশ সুপার
রাজবাড়ী।