হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের দায়ে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর অন্তারমোড় এলাকা থেকে বুধবার দুপুরে ৬টি বালু বোঝাই বাল্কহেড আটক করেছে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। আটকের পর এ ৬টি বালু বোঝাই বাল্কহেডের ৬ জন চালককে (সুকানি) বালু উত্তোলন ও পরিবহনের বৈধ কাগজপত্র দেখতে আটক করা হয়।
পরে বুধবার বিকালে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (এনডিসি) মো. সাইদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি মামলা দায়ের করেন। একই সাথে আটককৃত ৬টি বাল্কহেড এর ৬ জন চালককে (সুকানি) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তাদের কাছ থেকে মুচলেকা প্রদান করা হয়েছে।
বাল্কহেড হলো ইয়া গাউস এর সুকানি মো. গাজিবুদ্দিন সরদার, মায়ের দোয়া-১ এর জুয়েল গাজি, জেরিন সুলতানা’র কবির জমাদ্দার, এসএম আদী এর জামাল হোসেন, মক্কা-মদিনা এর মো. রাহুল সরকার এবং মায়ের দোয়া-২ এর মো. জিলাল মোল্লা। বাল্কহেড গুলো আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ ও বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে চালকদের আটক করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, উচ্চ আদালতের (হাইকোর্ট) নিষেধাজজ্ঞা অমান্য করে সম্প্রতি রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার শিলাইদ এলাকার কলাবাগান এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করে রাজবাড়ী-গোয়ালন্দ নৌপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছিল। বুধবার সকালের দিকে কুষ্টিয়া কলাবাগান এলাকা থেকে একত্রে ৬টি বালুবোঝাই বাল্কহেড গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা হয়। পথিমধ্যে গোয়ালন্দের অন্তারমোড় এলাকায় পৌছলে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। সেখান থেকে ৬টি বালু বোঝাই বাল্কহেড ও ৬ জন চালককে আটক করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ দৌলতদিয়া নৌপুলিশের দল আটকের পর তাদের বৈধতা আছে কি না যাচাই-বাছাই করতে থাকে।
মায়ের দোয়া বাল্কহেড এর চালক (সুকানী) জিলাল মোল্লা বলেন, নদীতে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে বলে রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া থেকে স্থানীয়রা খবর দেয়। আমরা কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কলাবাগান এলাকা থেকে বালি নিয়ে অন্তারমোড় পর্যন্ত আসলে স্থানীয়রা আমাদের নদীর পাড়ে থামাতে বলে। পরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসে আমাদের আটক করে বাল্কহেড গুলো জব্দ করে।
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জেএম সিরাজুল কবির বলেন, গোয়ালন্দের চর বরাট অন্তারমোড় এলাকায় স্থানীয়রা বালুবাহী কয়েকটি বাল্কহেড আটক করেছে বলে খবর দেয়। খবর পেয়ে দৌলতদিয়া থেকে নৌপুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই)সহ পুলিশ পাঠানো হয়। সাথে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিত হন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাইদুল ইসলাম।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (এনডিসি) মো. সাইদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে আমরা বালুবাহী ৬টি বাল্কহেডসহ চালকদের আটক করেছি। পরে তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।