রাজবাড়ীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে দলীয় কার্যালয়। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি চত্ত্বরের সামনে আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও অ্যড. লিয়াকত আলী-হারুন গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপির পদযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যড. লিয়াকত আলী-সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ গ্রুপ দলীয় কার্যালয়ে জমায়েত হয়। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে খৈয়ম গ্রুপ দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের সময় লিয়াকত-হারুন গ্রুপের কর্মীরা বাধা দেয়। এসময় দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে খৈয়ম গ্রুপের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। এর কিছুক্ষণ পরে খৈয়মের নেতৃত্বে খৈয়ম গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠি সোঠা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে লিয়াকত-হারুন গ্রুপ তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। দ্বিতীয় দফায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। উভয় পক্ষই এসময় ইট পাটকেল ও লাঠিসোঠা ব্যবহার করে। সংঘর্ষের সময় পুলিশকে কার্যত নীরব দেখা যায়। খৈয়ম গ্রুপ প্রতিরোধ ভেদ করে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ থেকে আবার ফিরে যায়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন গাজীসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় দলীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষসহ তিনটি কক্ষ, চেয়ার, টেবিল, আলমিরা, মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন-উর রশিদ বলেন, ‘সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতে আজ একদফা আদায়ের জন্য সরকারের পদত্যাগ দাবির জন্য পদযাত্রা ছিল। এটা আমাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে পদযাত্রা করার জন্য পার্টি অফিসে জড় হতে থাকি। কিন্তু খৈয়ম গ্রুপের সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী এসে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের সদর উপজেলার বিএনপি নেতা আবুল হোসেন গাজীসহ ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়।’
রাজবাড়ীর-১ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, ‘রাজবাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগ সরকারের একটি এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে বিএনপির একাংশ। আজকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রায় অংশ নিতে পার্টি অফিসের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের পার্টি অফিসে ঢুকতে দেয়নি। তাদের সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আফসার আলী সরদার, যুবদল নেতা সম্রাটসহ আমাদের ১০-১২ জন আহত হয়।’
রাজবাড়ী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলায় ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’