পণ্যবাহী ট্রাক চালক লিটন মিয়া। রবিশাল থেকে ঢাকার শ্যামবাজার ২১ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় ৪৮ঘণ্টা কেঁটে গেছে। দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত ১হাজার টাকা রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়েছে। ফেরি পার হতে ২হাজার টাকা লাগবে। ঢাকা শ্যামবাজার পর্যন্ত ৮হাজার টাকার তেল লাগবে। হেলপার ও চালকের কমিশন ৪হাজার ৫শত টাকা। খাবার বাবদ ২হাজার টাকা। তাহলে মোট ব্যয় হলো ১৬হাজার ৫শত টাকা। মালিক পাবে মাত্র ৪হাজার ৫শত টাকা।এসময় একটি কাভারভ্যান (ঢাকা মেট্টো-অ-১৪-১৬৭) এর চালক বলেন, ৩দিন কেটে গেছে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারের জন্য সিরিয়ালে আছি। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে হকারের কাছ থেকে শুকনো খাবার খেয়ে হচ্ছে। গোসল করতে পারছি না। এক পোশাকে কাঁটাতে হচ্ছে। ঘুমাতেও পারছি না। সুতরাং ঘুম চোখে নিয়ে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, এভাবে জীবন চলতে পারে না। দৌলতদিয়া ঘাটে অব্যবস্থাপনা না হলে হয়ত আমরা সহজে ফেরি পারাপার হতে পারতাম। মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ৬কিঃমিঃ পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের একাধিক সারি রয়েছে।
এসময় একাধিক পন্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বিআইডব্লিউটিসি ও ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনার কারণে উভয় ফেরি ঘাটে প্রতিনিয়ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ছোট বড় ১৮টি ফেরি সচল রয়েছে। দুইটি ফেরি বিকল থাকায় পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের পানির গভীরতা কমে গেছে। যে কারণে নদীতে নাব্যতা দেখা দিয়েছে। নদীতে নাব্যতার কারণে একাধিক ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এতে প্রতিটি ফেরির অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। তিনি আরও জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচলে বিঘিœত হচ্ছে। যে কারণে ওই নৌরুটের ভারী যানবাহন গুলো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করছে।