ছেলেটা ফুটবল খেলতে ভীষণ ভালোবাসে। নিয়মিত কোচিংয়ে আসা এবং ম্যাচ খেলার প্রতি তার ছিল আগ্রহ। কিন্তু ফুটবল নিয়ে তার এত মাতামাতি পছন্দ করতো না তার পরিবারের লেকজন। রাগারাগি করত। তাই সে কাউকে না বলে বাড়ি থেকেই বের হয়ে যায়।
অবশেষে ৫ দিন নিখোঁজ থাকার পর রবিবার বিকেলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে।
উদ্ধার হওয়া কিশোরের নাম মো. আল-আমিন (১৩)। সে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দুদুখানপাড়া এলাকার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে এবং স্থানীয় দুদুখানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
রবিবার সন্ধ্যায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আলামিনকে উদ্ধার ও তার নিখোঁজ হওয়ার রহস্যের বিষয়টি জানান রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম।
তবে আল-আমিনের বড় ভাই মো. আলিম দাবি করেন, আমাদের পরিবার থেকে ওর ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য কোনও রকম বাধা প্রদান করা হয় না। সে কিসের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছে সেটাও আমরা বলতে পারছি না। তবে তাকে সুস্থভাবে খুঁজে পাওয়ায় আমরা ভীষন খুশি। এর জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি।আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি পুলিশকে।
আলামিনের নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে “স্কুল ছাত্রকে অপহরন,মুক্তিপন দাবি ” শিরোনামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হয়।
পরিবারে চার সন্তানের মধ্যে সে তৃতীয়। তার বাবা ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে গাড়ি চালকের কাজ করেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায় শিশুটির স্কুলের এক শিক্ষক ফেসবুকে তার হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এর সুযোগ নিতে একটি প্রতারক চক্র টাকা হাতিয়ে নিতে অপহরণের নাটক সাজিয়ে শিশুটির অভিভাবকদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এদিকে খোঁজা-খুজির একপর্যায়ে রবিবার বিকাল ৫টার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলাধীন কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম মাঠে ফুটবল খেলাকালীন তাকে পাওয়া যায়। নিখোঁজের ৪ দিন সে রাজবাড়ী রেলওয়ে ষ্টেশনে থাকত। রবিবার রাতেই আলামিনকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আল-আমিন জানায়, ফুটবল খেলা আরও ভালোভাবে শেখার জন্য আমি বাড়ি থেকে স্বেচ্ছায় রাজবাড়ীতে আসি। ফুটবল খেলা খুব পছন্দ করি। বেশি বেশি ফুটবল খেলতে চাই।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম জানান, বাড়ি থেকে ফুটবল খেলতে বারণ করার কারণে আল আমিন বাড়ি থেকে বের হয় বলে আমাদের জানিয়েছে। তবে অপহরণের নাটকটি সাজানো। সেই চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।