রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে ২ নং রেলগেট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি ভাঙাচোড়া আর খানাখন্দে ভড়া। যেকারণে হাসপাতালে যাওয়ার সময় রোগীদের যেমন শঙ্কায় পড়তে হয়, তেমনি যান চালকদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
দেখা গেছে, দেড় কিলোমিটার সড়কটির অন্তত ১০ স্পটে বড় আকারের ভাঙা। এর মধ্যে ২ নং বেড়াডাঙ্গার মোড়, ৩ নং বেড়াডাঙ্গার উত্তরে, সেগুন বাগিচা, খবিরের দোকান, রাজবাড়ী মেডিকেল সেন্টারের সামনে ভাঙাচোড়া আর খানাখন্দে ভড়া। কিছুদিন আগেও সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ছিল পাবলিক হেলথ মোড়ের কাছে। পাবলিক হেলথ থেকে চেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত দুইশ ফুট অংশ ভেঙে গর্ত হয়ে যায় । সেখানে জমেছিল বৃষ্টির পানি। সম্প্রতি পৌর কর্তৃপক্ষ জায়গাটুকু মেরামত করে।
সেগুন বাগিচা এলাকায় রাস্তার পাশেই অবস্থিত শুভ বিউটি কর্ণার। তার দোকানের সামনে ভাঙাচোরা। ভাঙা অংশে পানি জমে আছে। এই দোকানের মালিক শুভ জানান, ভাঙা অংশের নীচে পানির পাইপ আছে। এই পাইপটি দীর্ঘদিন ধরে ছিদ্র। মেরামত করার পরে আবারও ছিদ্র হয়। তার উপর সব সময় ট্রাক যাতায়াত করে। এতে ভাঙাচোরা রাস্তায় আরও চাপ পড়ে। মানুষের খুব সমস্যা হয়।
সেলিম স্টোরের মালিক সেলিম মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, রাস্তার কথা বলে আর কী হবে। আজ চার পাঁচ বছর ধরে রাস্তার এ অবস্থা। কতজনের কাছে বলেছেন রাস্তাটি টিক করে দিতে। কেউ দেয়না। মাঝে মধ্যেই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েকদিন আগেও একটি চালের ভ্যান উল্টে পড়ে। রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ যে, হেঁটে যাওয়াও সমস্যা।
কাজীকান্দা এলাকার বাসিন্দা নাসরিন বেগম জানান, কতদিন ধরে রাস্তাটি খারাপ। এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে চলাচল করা যায়না। তিনি নিজেও কোমরের ব্যথায় ভুগছেন। যেকারণে এই রাস্তা দিয়ে তিনি রিক্শায় চড়তে পারেন না। রাস্তাটির জন্য খুব সমস্যায় রয়েছেন।
রিকশা চালক আপান মোল্লা জানান, তিনি রাজবাড়ী শহরের বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালান। পাবলিক হেলথ থেতে হাসপাতাল হয়ে রাজবাড়ী শহরের ২ নং রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। রোগী নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে আসার কোনো উপায় নেই। একজন জরুরি রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়া দরকার। এজন্য একটু গতিতে চালাতে হয়। গতিতে চালালে তার গাড়ির ক্ষতিতো হয়ই ঝাঁকিতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়। এজন্য অনেকটা পথ ঘুরে চলাচল করেন।
অটোরিরক্সা চালক মেহেদী হাসান জানান, ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে অটোরিক্সা চালানোর কারণে গাড়ির যন্ত্রপাতি মাঝে মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। দিনে যা আয় করেন তার অর্ধেকই চলে যায় গাড়ি মেরামতের পেছনে। গাড়ি না চালালে তো আর সংসার চলবে না। এজন্য বাধ্য হয়ে গাড়ি চালান।
রাজবাড়ী পৌরসভার একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে পৌর পরিষদের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। রাস্তাটি একটি বড় প্রকল্পে ঢুকে আছে। এ প্রকল্পে ড্রেন, রাস্তা, ফুটপাত এবং বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। দুই মাসের মধ্যে কাজটি শুরু হতে পারে। তিনি জানান, এই রাস্তায় যে পাইপ লাইন আছে সেটি ৩৫ বছরের পুরনো। এখন এই পাইপ ব্যবহার করা হয়না। এটি অপসারণ করে নতুন পাইপ স্থাপনের কথা রয়েছে। ড্রেনও নতুন করে করা হবে।
রাজবাড়ী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মাজহারুল ইসলাম জানান, তিনটি বড় প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় মন্ত্রণালয়ে আছে। খুব শীগগীরই কাজ শুরু হবে।