‘শিল্প স্পর্শে প্রস্ফুটিত হোক কুসুম কুঁড়ি’ এই স্লোগানকে ধারণ করে ১০ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ীর নতুন নাট্যসংগঠন নাট্যনন্দনের যাত্রা শুরু হয়। রাজবাড়ী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সন্ধ্যায় আবৃত্তি সংগীত নৃত্য ও নাটক পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দোলনচাঁপা সঙ্গীতাঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তপন কুমার দে। দলটির শুভ উদ্বোধন করেন আবোল তাবোল শিশু সংগঠনের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এডভোকেট দেবাহুতি চক্রবর্তী।
আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার ও রাজবাড়ী একাডেমির সভাপতি সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি কবি সালাম তাসির, চারণ থিয়েটারের সাবেক সভাপতি অলিউল হাসান মঞ্জু, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আজিজুল হক, সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার আজিজা খানম, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব কাজী পলাশ ও মঙ্গলনাটের সাধারণ সম্পাদক ফকীর জাহিদুল ইসলাম রুমন, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাখালিয়া নাটকের গল্প সংক্ষেপ: গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের প্রধান যিনি মহাজন নামে স্বীকৃত। মহাজনের বাড়িতেই রাখার নামে একটি ছেলে ও তার মা পরিবারের অন্য সদস্যের মতোই তাদের সাথে বসবাস করে এবং মহাজনের ঘোড়ার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে রাখাল নামের ছেলেটা। রাখাল ছেলেটি একটি প্রাণবন্ত সংগীতপ্রিয় এবং মেধাবী। মহাজনের ব্যবসা এবং পারিবারিক সমস্ত দিকেই তার সমান নজর থাকে। কিন্তু আত্মভোলা হয়ে যায় যখন সে সঙ্গীতে নিমজ্জিত হয়। সে গ্রামীণ মেলা খেলাধুলা সংগীত নিয়েই দিনাতিপাত করে। এভাবেই চলতে থাকে তার দিন। মাঝে মাঝে মহাজন নিজের সন্তানের মত শাসনও করেন রাখালকে। রাখালের সততায় একটি অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় মহাজনের হিসাবরক্ষক। সে মহাজনের ব্যবসা থেকে খাবারের বস্তা চুরি করে। রাখালের কাঁদে চাপে চুরির দায়। দায়ী থেকে উত্তরণ ঘটাতেই চলে নানা নাটকীয়তা। এভাবেই চলতে থাকে গল্পের ধারাবাহিকতা এবং একসময় সে প্রমাণ করতে সক্ষম হয় সে নিরপরাধ ছেলে। রাখালের সততার গুনে সেই স্বীয় অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়। একটি সততার গল্পে রাখাল তৈরি করে এক উদারতার পরিচয় এরই নাম নাটক রাখালিয়া।
নাট্য নির্দেশক উচ্ছ্বাস কুমার ঘোষ বলেন, মূলত; শিশুদের নিয়ে আমাদের সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে। শিশুরা যাতে সুস্থধারার সাংস্কৃতিক চর্চা করার সুযোগ পায়। পড়ালেখার পাশাপাশি যাতে এখানে শিষ্ঠাচার, নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ শিখতে পারে সেদিকেও আমরা লক্ষ্য রাখবো। আমরা সকলের সহযোগিতা নিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার পর মঞ্চস্থ হয় নাট্যনন্দনের প্রথম প্রযোজনা মৌলিক নাটক রাখালিয়া। রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন উচ্ছ্বাস কুমার ঘোষ। এটি নাট্যনন্দনের প্রথম প্রযোজনা। সহকারী নির্দেশনায় ছিলেন প্রাপ্য প্রতীম সাহা ও সিঁথি সান্যাল। আবহ সংগীত পরিকল্পনায় তপন কুমার দে, কণ্ঠে শারমিন খাতুন, অথৈ ও প্রীতম সেন, প্রপস্ নিমার্ণে যাকারিয়া খান জনি, রূপসজ্জায় ইশারা খাতুন, প্রযোজনা অধিকর্তা নয়ন কুমার বিশ্বাস, তত্ত্বাবধায়নে আতাহার আলী সুমন। অভিনয়ে ছিলেন তনিমা, আশা, রক্তিম, সোহাগ, রিফাত, সাদিয়া, সোহানা, মিম, মুক্তা, যতি, আদিত্য, প্রিতম, সজল, জিম, ফাতেমা।