রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের কোলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পূরবী ইসলামের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে কোলারহাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি একই গ্রামের ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী। ফরহাদ হোসেন কোলারহাট সদরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করেছে।
নিহতের মেয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মাইশা ফারজানা জানান, তিনি ফরিদপুর থেকে শুক্রবার দুপুরে মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। তার মা রোজা ছিলেন। মা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। ইনহেলার লাগে। একারণে মাকে রোজা রাখতে বারণ করেছিলেন। সন্ধ্যার আগে তার মাকে আবারও ফোন করেন। তখন তার মা ইফতারি রান্না করছিলেন। রাতে যখন ফোন দেন তখন ফোন রিসিভ হয়নি। পরে তার ভাইকে ফোন দেন। তার ভাই জানায়; মা দরজা বন্ধ করে নামাজ পড়ছেন। তিনি তখন তার ভাইকে বলেন, মা তো দরজা বন্ধ করে নামাজ পড়ে না। একারণে ভালো করে দেখতে বলেন। অনেক ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে তার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহতের ভাই মেহেদী হাসান জানান, তার বোন-দুলাভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন দাম্পত্য কলহ চলছিলো। দুলাভাই ফরহাদ হোসেনের সাথে এক শিক্ষিকার সম্পর্ক রয়েছে। এবিষয়টি নিয়েই দুজনের মধ্যে বিরোধ। এছাড়া তার ভাগ্নেও বোনকে মাঝে মধ্যে নির্যাতন করতো। বাবা-ছেলে মিলে তার বোনকে হত্যা করেছে বলে ধারণা তার। পূরবী ইসলামের সহকর্মী কোলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল ইসলাম জানান, পুরবী ইসলাম খুব ভালো শিক্ষক ছিলেন। তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিলো বলে তিনি শুনেছেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন জানান, স্কুলশিক্ষিকার আত্মহত্যার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিতে নামানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশ নিহতের স্বামী ফরহাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রেখেছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।