রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার ৩ বিলের জলাবদ্ধতায় ৪ হাজার একর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। জলাবদ্ধতা দূর হলে বিলগুলো আশপাশের ১৫ টি গ্রামের ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হবে। চাষযোগ্য হবে পেঁয়াজ, রসুন, ধান ও পাটসহ নানান মূল্যবান ফসল। জলাবদ্ধ থাকা বিলগুলো পদ্মবিলা, কানাবিলা ও কাসমির বিল নামে এলাকায় পরিচিত। মাজবাড়ী, বোয়ালিয়া ও মৃগী ইউনিয়নের বিস্তৃত এলাকায় সৃষ্ট এই বিলে রয়েছে মহিমশাহীকালিকাপুর, রাইপুর, শ্রীপুর, কুষ্টিয়াডাঙ্গী, কুষ্টিয়াপাড়া, পঁচাকুলটিয়া, পাঁচটিকরী, কুলটিয়া, শায়েস্তাপুর, মসুরিয়া, বড়ইচাড়া, শিকজান, কলকলিয়া, কাসাদহ ও বাগগারী নামের ১৫ টি মৌজা।
স্থানীয়রা জানায়, বর্ষা মৌসুমে বিলের তলভাগে পানির গভীরতা থাকে ৮/১০ হাত। চৈত্র মাসে শুকিয়ে যায়। বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে ধান চাষ শুরু হয়। তবে আষাঢ় মাসেই শুরু হয় জলাবদ্ধতা ২হাত, ৪ হাত করে ৮/১০ হাত পর্যন্ত। এই অবস্থায় তারা দীঘা জাতের ধান চাষ করে। এ জাতের ফলন খুব কম। উন্নত জাতের ১০ ভাগের একভাগ। এধরনের চাষে তাদের খরচ ওঠে না। কৃষকদের দাবী পদ্মবিলের মধ্যভাগ থেকে খাল খনন করে কানাবিল ও কাসমিয়া বিলের মধ্যভাগ দিয়ে মৃগী খালের সংযোগ করে দিলে বিলের পানি গড়াই নদীতে চলে যাবে। এতে বর্ষা মৌসুমে বিলে প্রচুর মাছ আসবে। শুকনা মৌসুমে চাষ হবে পেঁয়াজ, রসুন, উফশী জাতের ধান ও পাট। নতুন স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ২০ হাজার কৃষক পরিবার।
পদ¥বিল পারের মহিমশাহীকালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান চুন্নু জানান, ২ বছর আগে আমরা ৩ বিলের সমস্যার কথা উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ মাছিদুর রহমানের কাছে তুলে ধরেছিলাম। তিনি পদ্মবিল এলাকা ঘুরে এর অনাবাদি জমির পরিমাপ করেন ১ হাজার একর। অন্য বিলগুলোর পরিমাপ করে খাল খননের আশ্বাস দিয়েছিলেন। উনি বদলী হয়ে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনার আর অগ্রগতি হয়নি।
স্থানীয় শিক্ষক মো: মনিবুর রহমান টুটুল জানান, বিলের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা হলে মাজবাড়ী, মৃগী ও বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ২০ হাজারের অধিক কৃষক পরিবার উপকৃত হবে। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার খুলে যাবে। আধুনিক চাষাবাদের এই যুগে পদ্মবিলা, কানাবিলা ও কাসমির বিলের পানি নিস্কাশন এখন সময়ের দাবী।
মাজবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী শরিফুল ইসলাম ইসলাম জানান, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় সারাদেশে খাল খনন কর্মসূচি চালু করেছে। তিনি পদ্মবিলা, কানাবিলা ও কাসমির বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এই কর্মসূচির আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদার জানান, পদ্মবিলা, কানাবিলা ও কাসমির বিলের জলাবদ্ধতার বিষয়টি কৃষি বিভাগের নজরে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতা পেলে খাল খননের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূর করা হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে ।