বৃক্ষরোপণ কবিতা পাঠ গান আর আলোচনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে কবি আবু হাসান শাহরিয়ারের জন্মদিন। রাজবাড়ী একাডমি আয়োজন করে এসব অনুষ্ঠানের।
সকালে রাজবাড়ী কালেক্টরেট স্কুল প্রাঙ্গনে করা হয় বৃক্ষরোপণ। বিকেলে ঘরছাড়ায় আয়োজন করা হয় কবিতা পাঠ, আলোচনা ও গানের। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ আতিকা বেগম রাশি।
আলোচনায় অংশ নেন রাজবাড়ীর সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার আজিজা খানম, কবি সালাম তাসির, কবি খোকন মাহমুদ, আদর্শ মহিলা কলেজের শিক্ষক আহসান হাবীব, রাজবাড়ী একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বিশ্ব ভরা প্রাণ এর সভাপতি আতাউর রহমান, অংকুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক গোলাম সারোয়ার, শিক্ষক ছায়া চক্রবর্তী, রাবেয়া লিপি, শাহনাজ বেগম, আব্দুর রব সুমন, আবৃত্তিকার সানজিদা সনোকা, অনামিকা আজাদ, সৌরভ চক্রবর্তী, লাবিব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজবাড়ী একাডেমির সভাপতি সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান।
সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলা সাহিত্যের এক বিরল প্রতিভা কবি আবু হাসান শাহরিয়ার। যারা কবিতা বোঝেন তাঁরা তাঁকে মূল্যায়ন করবেন। একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে আমার কাছে তিনি অনন্য এক কবি, একজন সাহসী গদ্যশিল্পী এবং একজন সৃষ্টিশীল চৌকস সম্পাদক। কবিতা ও গদ্য উভয়ক্ষেত্রেই তিনি সমান মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।
তিনিই বড় কবি যিনি পাঠকদের কাছে সহজবোধ্য। আমরা যেভাবে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জসীম উদ্দীন, জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান,সুনীল,নির্মলেন্দু গুণকে বুঝি আবু হাসান শাহরিয়ারও সেভাবে সহজবোধ্য।
বাংলা কাব্যের ইতিহাসে তাঁর আসনটি স্থায়ী হয়ে থাকবে। সত্যেন্দ্রনাথ যদি ছন্দের যাদুকর হন আবু হাসান শাহরিয়ার শব্দের যাদুকর। তাঁর কবিতা ও গদ্যে শব্দকে নিয়ে দারুণ খেলেছেন। তাঁর কবিতার অনেক পংক্তিই সমকালে প্রবাদ। তাঁর কবিতায় একটা চিরকালীন আবেদন আছে।
‘
অন্তহীন মায়াবী ভ্রমন ‘দিয়ে তাঁর কবিতা যাত্রা শুরু তারপর একে একে অনেক শস্য তুলেছেন গোলায়। তার মধ্যে তোমার কাছে যাইনা তবে যাব, নিরন্তরের ষষ্টী পদী, এবছর পাখিবন্যা হবে, হাটে গেছে জড় বস্তুুবাদ,তোমাদের কাচের শহরে, কিছু দৃশ্য অকারণে প্রিয় প্রভৃতি অন্যতম। তবে বালিকা আশ্রম কবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা।
আবু হাসান শাহরিয়ার এর গদ্য রচনাও যথেষ্ঠ পাঠক নন্দিত। কবিতা অকবিতা অল্পকবিতা, কবিতার প্রান্তকথা, কবিতা বিষয়ক গদ্য। তাছাড়া অর্ধ্যসত্য, সমাত্বজীবনী,পাঁয়ে পাঁয়ে, নৈশব্দ্যের ডাকঘর উল্লেখযোগ্য।
বাংলা সাহিত্য ও বিশ্ব সাহিত্যের অলিগলি তাঁর চেনা। তাঁর বিপুল পঠন পাঠন তাঁকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি ক্রমাগত নিজেকে নবায়ন করেছেন। তাই নিজেকেই অতিক্রম করেছেন বারবার।
কবির জন্মদিনটি আমরা রাজবাড়ীতে প্রতি বছর পালন করে থাকি।