জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গতকাল হামলা করে যারা ভেবেছিল পদযাত্রা শেষ হয়ে যাবে, তারা সুযোগের ব্যবহার করে ভেবেছিল আতঙ্ক তৈরি করবে সারাদেশে। মানুষ আর আমাদের পথসভায় আসবে না। যদি তারা সশস্ত্র অবস্থায় না আসতো তাহলে রাজবাড়ীতে যত মানুষ হয়েছে গোপালগঞ্জেও হতো। জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রাজবাড়ী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা জীবনের ভয় করিনা সেই গত বছর জুলাই থেকে। রাজপথে নেমেছি যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নতুন দেশ প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো। আমরা রাজপথ ছাড়ছি না, এটা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যা খুঁজে না পেলে সমাধান কী করে করবো। আমরা সমস্যা খুঁজে বেড়াচ্ছি সারাদেশে। এই পদযাত্রার অন্যতম উদ্দেশ্য জেলায় জেলায় আপনাদের সমস্যা শোনা ও তার সমাধান করা। আপনাদের সমস্যার সমাধানের রাজনীতি করতে চাই। জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ অভুত্থানের পরে যে ইনসাফের বাংলাদেশ, বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিল, সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে লড়াই অনেক দিক থেকেই করতে হবে। আমরা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত আছি। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা আপনারা সাধারণ জনগণ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এটা একটা ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ। এই আদর্শকে পরাস্ত করতে হবে। শুধু নিষিদ্ধ করে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে পারব না। আাওয়ামী লীগকে আইনীভাবে, রাজনৈতিকগভাবে, বুদ্ধিভিত্তিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। মুজিববাদী আদর্শ আওয়ামী লীগের গোড়া। যারা বাংলাদেশে গুম, খুন করেছে। মুজিববাদীকে কবর দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমরা জানি আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আমাদের লক্ষ্য নতুৃন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। সেই লড়াইয়ের আহ্বান জানাচ্ছি। আগামী ৩ আগস্ট ঢাকা শহীদ মিনারে জড়ো হচ্ছি। রাজবাড়ীবাসীও সেখানে যাবেন।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এই বাংলাদেশে ্আবু সাঈদের মৃত্যুর পর প্রত্যেকটা মানুষ আবু সাঈদ হয়ে উঠেছিল। আমাদের মৃত্যুর পর কেউ না কেউ আবার নাহিদ হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ সেদিনই ঘুরে দাঁড়াবে যেদিন সমূলে আওয়ামী লীগ নির্মূল হবে। আওয়ামী লীগ সব সসময় প্রতিহিংসার রাজনীতি করে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা পাখির মত মানুষকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে নিতে হবে।
যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, রাজবাড়ীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা প্রয়োজন।
সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনীম জারা বলেন, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি হয়। কিছু হলেই যেতে হয় ফরিদপুর। অ্যাম্বুলেন্সেই যাতে চিকিৎসা শুরু হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসার অভাবে টাকার অভাবে মানুষ মারা যাবে না। আমরা মাঠে নেমেছি যাতে দেশটা সুন্দর হয়। ওই সংবিধান আমরা রাখবো না। সংবিধান হবে বাংলাদেশের সব মানুষের।
কেন্দ্রীয় সদস্য সাইয়েদ জামিল বলেন, রাজবাড়ীর উন্নয়নের কথা ভেবেছেন এমন কোনো নেতা পাইনি। তারা হাজার হাজার টাকা লুট করে বিদেশের ব্যাংকে জমা করেছেন। রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজি প্রকট আকার ধারণ করেছে। কারা চাঁদাবাজি করছে তা সবাই জানেন। আগামী নির্বাচনে কোনো চাঁদাবাজকে ভোট দেবেন না।
পথসভা পরিচালনা করেন এনসিপির উত্তর অঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এসময় সদস্য সচিব আকতার হোসেন, নাসিরউদ্দিস পাটোয়ারীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।