রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে বাছুরের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ায় বড় গরু ও বাছুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক খামারিসহ স্থানীয় কৃষকেরা।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভাসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অনেক এলাকাতেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ছে এলএসডি। প্রতিষেধক হিসেবে লাম্পি স্কিন ডিজিজ-এর জন্য সরকারি কোন ভ্যাকসিন নেই। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই বাছুর। তাই এলএসডি থেকে গবাদিপশু রক্ষায় গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও খামারিদের করণীয় সম্পর্কে সতর্ক করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণী প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২ নং বেপারী পাড়া এলাকা থেকে সুমন নামে এক কৃষক তার লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত একটি বাছুর নিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, ১৫/২০ দিন যাবত তার বাছুরের শরীরে গোটা গোটা দেখা দিয়েছে। ২/৩ দিনে বাছুরটি বেশি অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।
উজানচরের চর কর্ণেশনা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, রাতের বেলায় ভালো গরু গোয়ালে রেখে ঘুমাতে যাই, সকালে বাছুর বাহিরে বের করতে গেলে দেখি চামড়ায় প্রথমে গুটি বের হয়ে ফোসকা পড়েছে, পরে জ্বরের কারণে কাঁপুনি ও খাবার ছেড়ে দেওয়ায় দুর্বল হয়ে বাছুর মাটিতে নুয়ে পরছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিস্পদ অফিসার মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘লাম্পি স্কিন নামের ভাইরাসজনিত এই রোগটি ছোঁয়াচে। মশা ও মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারিভাবে আমরা এ রোগের কোন ভ্যাকসিন এখনো আবিস্কৃত হয়নি। তবে বেসরকারিভাবে কিছু কিছু ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, এ রোগে বড় গরুর চেয়ে বাছুর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি সম্পর্কে এলাকার কৃষক ও খামারিদের সতর্ক করতে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক করছি। এ রোগ থেকে রক্ষা পেতে গোয়ালঘরসহ আশপাশ এলাকা সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি গরু ও বাছুরকে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানো, নিমপাতার পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে গরু-বাছুরকে গোসল করাতে হবে।