ট্রাফিক আইন আমরা ইচ্ছা করেই অনেকে মানতে চাইনা। কেউ পরিচয় দেয় আমি অমুক প্রশাসকের। আমি অমুক অফিসের। নানা ধরণের পরিচয় দিয়ে চলে যেতে চায়। আমরা অনেক সময় বলি পুলিশ এইগুলা করে, পুলিশ ওইগুলা করে। আমরা সেটা ফেইস করছি। একজন সালাম দিচ্ছে। আরেক জন পেছন থেকে টাকা বের করে দিচ্ছে। নিয়ম না মানায় কেউ কেউ সরি বলতেছে। কেউ কেউ ধরার আগেই মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে তারাহুরা করে পালাচ্ছে। কারও কাগজ বা লাইসেন্স দেখার এখতিয়ার আমাদের নেই। আমরা মানুষদের বুঝাচ্ছি। তবে গত ৩ দিনে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। এমনটাই বলছিলেন গত ৩ দিন রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা রাজবাড়ী যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের উপ-প্রধান হালিম আল রাজি।
শনিবার রাজবাড়ী শহরের রেলগেইট, পাঁচতলা মোড়, পান্না চত্বর ও বড়পুল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজবাড়ী রেডক্রিসেন্ট সোসাই যুব ইউনিট, রোবার স্কাউট, আনসার সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভাগ হয়ে রাস্তায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন। তীব্র রোদ থাকায় অনেকে ছাতা ব্যবহার করছেন। যেসব মোটরসাইকেল চালকের হেলমেট নেই তাদের হেলমেট ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেখানে সেখানে রিক্সা বা মোটরসাইকেল ও যানবাহন থামাতে নিষেধ করছেন। এখানে দাঁড়ানো যাবেনা মামা। এখানে দাঁড়ানোর জায়গা না মামা বলে রিক্সাওয়ালাদেরকে বোঝাচ্ছেন। অনেকেই তাদের কথা মানছেন। যাদের মাথায় হেলমেট নেই তারা পরবর্তিতে হেলমেট ব্যবহারের কথা দিচ্ছেন।
গত ৫ আগষ্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতন ঘটে। কর্মবিরতি থেকে বের হয়ে পুলিশ এখনও মাঠ পর্যায়ে কাজে ফেরেনি। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যানচলাচলে বেশ অরাজকতা সৃষ্টি হয়। এই সময়টাতে রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছে রোভার স্কাউট, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, আনসার বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হালিম আল রাজি বলেন, আমরা এই ৩ দিনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকালে অনেক কিছুই শিখলাম, অনেক কিছুই বুঝলাম। আমরা অনেক সময় পুলিশ দোষ করে থাকলেও বলে থাকি, না করে থাকলেও বলে থাকি। এই রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কঠিন ব্যাপার। আমাদের মেয়েরা দাঁড়াচ্ছে। ছেলেরা দাঁড়াচ্ছে। আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তবুও আবার এসে দাঁড়াচ্ছি। এখানে দাঁড়িয়ে থেকে মাজায় ও পায়ে বেশি ব্যাথা দেখা দিচ্ছে। আমরা মানুষকে আইন মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি। টানা ৪ দিন ধরে রাজবাড়ী শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। দায়িত্ব পালনরত শিক্ষার্থীদের অনেকেই পানি, কলা, জুস দিয়ে সহযোগিতা করছেন।