আমি যে এলাকায় বসবাস করি সেখান থেকে রেল ষ্টেশনের দুরত্ব এক মাইলের কম বা বেশী। রাজবাড়ী শহরটা মূলত রেল ষ্টেশন কেন্দ্রিক। আমার বাড়ি যেতে পথে মধ্যে ২৮ কলোনী নামে একটা বিহারী কলোনী আছে। যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে কসাইয়ের কাজ।। কসাইরা ছাগল গরু কেটে মাংস বিক্রি করে। মাংসের অবশিষ্ঠ অংশ খেতে প্রচুর কুকুর সে এলাকায় দেখা যেত। আমি কুকুর কে ভয় পাই।
কুকুরের পাশাপাশি এখন কিশোর গ্যাং নামে শুরু হয়েছে নতুন এক উপদ্রব। এরা রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকান ভিড় করে থাকে। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারীদের উত্যক্ত করা দেশের যেকোনো এলাকায় এখন এ ধরনের অপরাধ ‘কিশোর গ্যাং’-এর এর সদস্যররা করে আসছে। এদের দেখে আমি খুব ভয় পাই।
এক যুগ আগেও পাড়া-মহল্লাকেন্দ্রিক অপরাধের ঘটনায় নাম আসত কোনো না কোনো সন্ত্রাসী বাহিনীর। এখন সে জায়গা ‘দখল’ করেছে কথিত কিশোর গ্যাং। যদিও এসব বাহিনীর সদস্যদের বেশির ভাগই ১৮ বছরের বেশি বয়সী। আর এদের আশ্রয় প্রশয় দিয়ে আসছে প্রভাবশালী নেতারা। দলের মিছিলে লোক ভারী করার জন্য, টেন্ডায়বাজী করার জন্য, পরের জমি দখল করার জন্য এদের ব্যবহার করা হয়। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এ বছর গত এপ্রিল মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কথিত কিশোর গ্যাংদের তৎপরতা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এখন সারা দেশে ২৩৭টির মতো ‘কিশোর গ্যাং’ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা শহরে, ১২৭টি। এসব গ্যাংয়ের (অপরাধী দল) সদস্য ১ হাজার ৩৮২ জন। ঢাকার পর চট্টগ্রামে রয়েছে ৫৭টি। এসব দলের সঙ্গে জড়িত ৩১৬ জন।
এই সব কিশোর গ্যাংদের অপরাধের বিস্তার এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে, আগামীতে এসব বখাটে কিশোর গ্যাংই হবে রাষ্ট্রের দুশ্চিন্তার বড় কারণ। বখাটে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যেভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠছে তাতে সারা দেশের পাড়া-মহল্লায় সচেতন মহলসহ সবাই তৎপর না হলে এই গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাগাম টানতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমি পাগলা কুকুরের মতো কিশোর গ্যাংকেও ভয় করি।