সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

মাল্টার পর আঙুরেও সফল বাবু

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪
  • ৬৯ Time View

মাল্টার পর আঙুর চাষেও সফলতা পেয়েছেন সরোয়ার হোসেন বাবু। তার বাগানে রাশি রাশি আঙুর ফল শোভা পাচ্ছে। এগুলো খেতেও খুব সুস্বাদু। যিনি শখের বশে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি চারা সংগ্রহ করে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেছিলেন । এ বছর পুরো উঠানজুড়ে তৈরি করা মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচা পাকা আঙুর। সরোয়ার হোসেন বাবু রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাগমারা এলাকার বাসিন্দা। পরীক্ষামূলক চাষের পর বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সরোয়ার হোসেন বাবু। তার সংগ্রহে থাকা ১১টি জাতের পাশাপাশি ভারত থেকে আরও ১২টি জাত সংগ্রহ করে বাগান করতে ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ জমি প্রস্তুত করছেন।

জানা গেছে, অল্প পরিশ্রম ও স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। আঙুর চাষে বাড়তি কোনো খরচ নেই। জৈব সার প্রয়োগের পাশাপাশি সঠিক পরিচর্যায় একটি গাছে ৪০-৫০ বছর ফলন পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া বছরে একটি গাছে ৩ বার ফল আসে।

পরীক্ষামূলকভাবে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাগামায় ফল চাষি সরোয়ার ছাড়া এখন পর্যন্ত জেলায় বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ কেউ করেনি।

সরোয়ার বিশ্বাসের বড় ভাই আজিজুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আমার ছোট ভাই ইউটিউব দেখে মাল্টা ও কমলা চাষে সফল হওয়ার পর এবার আঙুর ফল পরীক্ষামূলক চাষ করে সেখানেও সফল হয়েছে। এখন সে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবে। তার গাছে ধরা আঙুর বাজারের আঙুরের থেকেও বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু। প্রতিটি থোকায় ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম আঙুর ধরেছে। আমার ছোট ভাইয়ের আঙুর ফলের বাগান দেখতে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় করে।

আঙুর চাষি সরোয়ার হোসেন বাবু বলেন, ছোটবেলা থেকে নিজ বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন শাক সবজি ও ফলের আবাদ করি। আমার আঙুর চাষের শখ জাগে। তখন ধারণা ছিল আমাদের দেশে আঙুর মিষ্টি হয় না। তারপরও গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি জাত সংগ্রহ করে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করি। গত বছরের চেয়ে এ বছর বিপুল পরিমাণ ফলন দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। প্রতিদিনই আঙুর দেখতে অনেক মানুষ আসেন। খেয়ে প্রশংসাও করেছেন। যে কারণে আমি পরীক্ষামূলক থেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য প্রায় ৭০ শতাংশ জমি রেডি করেছি। প্রায় ৪০টি জেলায় আঙুরের চারা কুরিয়ারের মাধ্যমে বিক্রি করেছি। সরকারিভাবে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযোগী করা গেলে জনগণের পুষ্টি ও উচ্চ মূল্যের ফলের চাহিদা মিটবে। এ আঙুর চাষে তেমন কোনো বিষ বা কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। শুধু মাটিতে জৈব সার ও পানি লাগে। খুব অল্প খরচ ও পরিচর্যায় আঙুর চাষ করা যায়। একটি গাছ রোপণের পর প্রায় ৫০ বছর ফলন দেয়। প্রতি মৌসুমে একটি গাছে দেড় থেকে ২ মণ বা তারও বেশি ফলন হয়। একটি গাছে বছরে ৩ বার আঙুর ধরে। মহামারি করোনার সময় যখন বেকার হয়ে ঘরে বসেছিলাম তখন ইউটিউব দেখে মাল্টা ও কমলা চাষ করে সফল হয়েছিলাম। প্রায় ১০ বিঘা জমির ওপর আমার মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে। প্রায় তিন বছর আমি আমার বাগান থেকে কমলা পাচ্ছি। আমি কমলা চাষেও সফল হয়েছি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, সরোয়ার হোসেনের উৎপাদিত আঙুর স্বাদ ও গুণে ভালো। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, রাজবাড়ীর মাটি ও পরিবেশ আঙুর চাষের জন্য উপযোগী। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক চাষিদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ আঙুর চাষ ও ফলন দেখে আশপাশের অনেক কৃষক উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। সরোয়ারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আশপাশের যারা বেকার যুবক রয়েছেন তারা আঙুর চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com