শেষ ঠিকানা
কাজী নাজরিন
সেই বাড়িতে ঘুমিয়ে আছে
আমার প্রাণের স্বজন
সেই বাড়িটা জমজমাট আজ
সেই বাড়িটা আপন।
নিশ্চুপ সেই আঁধার ঘরে
দিচ্ছে সবাই পাড়ি
যাচ্ছে সবাই তাল মিলিয়ে
পুরনো ঘরটা ছাড়ি।
চোখের সামনে একে একে
যাচ্ছে মনের সুখে
মনের দুখে কষ্টে মরি
দুঃখ সয়ে বুকে।
দাদার প্রিয় ভাইটা প্রথম
সেই বাড়িতে গেলেন
ভাইকে ভালোবেসে দাদা
সঙ্গী হয়ে গেলেন।
ভাইয়ের শোকে দাদা আমার
হয়তো গেছে চলে
দাদাও আমার হঠাৎ গেলেন
একটুও না বলে।
দাদার সাথে গল্প করতে
বড়ো জেঠার যাওয়া
বাবা ছেলের মিল হয়েছে
হয়েছে পরম পাওয়া।
বড়ো ছেলের শোকে দাদু
দিশেহারা হলেন
ছেলের মাত্র পাঁচ দিন পর
শেষ ঠিকানায় গেলেন।
দাদু আমার জায়নামাজে
হঠাৎ চিৎকার করে
কালেমা পড়তে পড়তে দাদু
নিথর হয়ে পড়ে।
দাদা দাদুর মধ্যিখানে
বড়ো জেঠার কবর
হয়তো এখন সবাই সবার
নিচ্ছে কতো খবর।
তাদের দেখে মেজো জেঠা
সেই বাড়িতে গেলে
দুই ভাই আর মা বাবা আজ
নিশ্চয়ই হেসে খেলে!
সেই বাড়িতে সবাই খুশি
খরচ পাতি নাই
সাড়ে তিন হাত হলেই হলো
মা বাবা ভাই ভাই।
সবার এখন সেই বাড়িতে
যেতে লাগছে তাড়া
আসল বাড়ি সেটাই হবে
আর কতদিন ভাড়া?
সবার প্রিয় চাচী আম্মা
বাড়ির ছোট বউ
সারাবাড়ি জমিয়ে রাখতো
যেন ফুলের মৌ।
তিনিও হঠাৎ চলে গেলেন
সেই বাড়িতে একা
জমজমাট আজ সেই বাড়িটা
হচ্ছে তাদের দেখা।
হঠাৎ আবার যায় কে চলে
যাচ্ছে না তা বলা
সেটাই কিন্তু শেষ ঠিকানা
বিধির অমন খেলা।