শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অফিসার্স ক্লাব মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন, সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান পিয়াল, বীরমুক্তিযোদ্ধা মহসিন উদ্দিন বতু, বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজ আহমেদ প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আলোচনসভায় প্রধান অতিথি কাজী কেরামত আলী এমপি বলেন, ১৯৪৮ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলাদেশে আসেন। তিনি রেসকোর্স মাঠে বলেন উর্দুই হবে এদেশের রাষ্ট্র ভাষা। তখনই ছাত্র সমাজ নো নো বলে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, জিন্নাহ প্রতিবাদ শুনে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে ছিলো। এই দিনটি আমাদের কাছে যেমন আনন্দের তার চেয়েও বেশি কষ্টের কারন আমরা কথা বলি বাংলায়, কিন্তু বাংলা ভাষার তাৎপর্য সম্পর্কে কতটুকু বুঝি। আমাদের বাংলা ভাষার অতীত ইতিহাস, সঠিক ব্যবহার জানতে হবে। মা মাটি মায়ের ভাষা বাংলা ভাষা পরিশুদ্ধভাবে ব্যবহার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংগালী জাতির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন যাতে বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে ভাষার ব্যবহার ও স্বাধীনভাবে স্বাধীন দেশের মানুষ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে পারে।
জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, ২১ মানেই স্বাধীনতার পূর্ব শর্ত। ২১ মানে একটি তারিখ নয়, ২১ হলো মুক্তির পথ। আমরা স্বপ্ন দেখি বাংলায় আমরা সেই ভাষা সঠিক শব্দ ব্যবহার করবো। আমি নবীনদের কাছে বার্তা দিচ্ছি তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলা ভাষা শিখবে, সম্মান করবে এই প্রত্যাশা করি।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, পদ্মা কন্যা রাজবাড়ী। বাংলাতেই লালন করতে হবে। দ্বিজাতিতত্ত্ব শুধু যে হিন্দু মুসলিম নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ছিলো তা কিন্তু নয়। বাংলা ও উর্দু ভাষার দ্বিজাতিতত্ত্বে পরিণত হয়েছিল। ১৯৫২ সালে দ্বিজাতি ভাষার পরিসমাপ্তি ঘটে। আর সেটাকে বাস্তবে রূপ দেয় ভাষা সৈনিকেরা।
২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় পুরস্কার গ্রহণ করছে নিভৃতা ইসলাম ও আদিবা বিনতে সোহেল।