আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি একই সাথে শোকাবহ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পাক বাহিনীর গুলি বর্ষণে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। মাতৃভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জনের এরূপ ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি নেই। তাঁদের অবদান ও আত্মত্যাগের ফলে যেমন সমুন্নত হয়েছে বাংলা ভাষার মর্যাদা, তেমনি রোপিত হয় বাঙালী জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন-‘স্বাধীনতার চেতনা’। মূলত ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক পথ বেয়েই ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর আপোষহীন নেতৃত্বে আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ভাষা আন্দোলনের মহান শহিদদের বাঙালি জাতি ও বাংলাভাষী জনগোষ্ঠী চিরদিন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অনন্য বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ইউনেস্কো কর্তৃক এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির মাধ্যমে দিনটি বিশ্বের সব জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় ঐক্য ও বিজয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের অগণিত সূর্য-সন্তানরা, যাঁরা রাঙিয়ে গেছে রাজ পথ, গুঁড়িয়ে দিয়েছে শাসকের কালো হাত, উপেক্ষা করেছে রক্তিম শ্যোন-চক্ষু-সেই অমর ভাইয়েরাই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের অসীম প্রেরণার অফুরান উৎস।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বাংলা ভাষা প্রেমীসহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মহান ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
আসুন আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেমের মূলমন্ত্রকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্যেষ্ দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।
জয় বাংলা, বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।
(জি.এম. আবুল কালাম আজাদ)
পুলিশ সুপার
রাজবাড়ী।