রাজবাড়ীর পাট ক্রয় কেন্দ্রের সাবেক এজেন্ট মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ব্যক্তির সাথে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আজম মন্ডল নামে এক ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এক সময়ে পাট ব্যবসায়ী ছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, মনোয়ারের হোসেন মনো পেশায় এক সময়ের পাট ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী পাট ক্রয় কেন্দ্রের এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে পাট বা নগদ অর্থ গ্রহণ করে প্রতারণামূলকভাবে তা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় দীর্ঘ সময় ধরে ভুক্তভোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মানোয়ার হোসেন মোহাম্মদ গোলাম রেজা বাবলু নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে পাট ক্রয়ের নামে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা নেয়। কিন্তু মাত্র ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে আর কোন টাকা তাকে ফেরত দেয় না। চন্দন নামক স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৪ লাখ টাকা মূল্যের পাট নিয়ে টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন। চঞ্চল কুমার দে নামে আরেক জনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। স্বপন কুমার নামে এক স্বর্ণকারের কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু তা আর কখনও তিনি ফেরত দেননি। এছাড়া শ্যামল কুমার সাহার কাছ থেকে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের নামে ৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। এছাড়া মনোয়ার হোসেন অবৈধভাবে প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে মানোয়ার হোসেন রাজবাড়ী শহরের চাউলবাজারে ১ কোটি মূল্যোর এক শতক জমিসহ মার্কেট, কো-অপারেটিভ মার্কেটে আনুমানিক ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার তিনটি দোকান, ৪৯ লাখ টাকায় সমব্যায় মার্কেটে ২টি দোকান ক্রয় করেছেন। এছাড়া রাজবাড়ী পৌর এলাকায় একাধিক জমির প্লট, একটি ট্রাক ও কোটি টাকার এফডিআর (মেয়াদী আমানত) রয়েছে বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয় তিনি এক সময় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার ছিলেন। ডিলার থাকাকালীন সময়ে চাল কম বিতরণ ও কার্ডধারীদের চাল না দেওয়ার অভিযোগে তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন বলেন, পূর্বের ব্যবসার দ্বন্দের জেরে তারা উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে আমাকে হেনস্থা করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। আমি কোন অবৈধ সম্পত্তি গড়ি নাই। আমার বাপ-দাদার যা ছিল, তাই নিয়েই আছি। আমি চাই দুদক এর সুষ্ঠু তদন্ত করুক।
এ বিষয়ে দুদকের ফরিদপুর অফিস কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানতে চাওয়া হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার ঘোষ জানান, এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তা অভিযোগকারীকে জানানো হবে।’