রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের সামনে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সোনাপুর বাজারে মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রী কলেজের সামনে হিটুর চায়ের দোকানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম আজাদ, তার বড় ভাই মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বিশ্বাস সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে ছিলেন। এসময় স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানাতে সেখানে যান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিন। উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে শোকজ বিষয়ে বললে একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিনের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এসময় সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বিশ^াস হঠাৎ করেই প্রধান শিক্ষকের একটি থাপ্পর দেন। এ বিষয় নিয়ে রাত ৮টার দিকে মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও প্রধান শিক্ষকের অনুসারীরা সোনাপুর বাজারে বিক্ষোভ করেন।
এ ঘটনায় বুধবার সকাল ১১ টার সময় স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক প্রতিনিধি ও শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে সোনাপুর মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রী কলেজের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন। এসময় বক্তৃতা করেন, নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন, কুরশী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায়, মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস সামাদ সবুজ, সহকারী শিক্ষক আইয়ুব হোসেন আমান, সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান ফিরোজ, আলী নুর হোসেন, শাহ আলম, নাজমা আক্তার মিনু, শিল্পী পারভীন, খলিলুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দীন বলেন, শিক্ষা সফরে মাদকসেবী নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমাকে শোকজ করেন। ওই শোকজের জবাব প্রদান করেছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানাতে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করেন। এসময় আমি প্রতিবাদ করলে সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বিশ্বাস আমাকে লাঞ্ছিত করেন।
সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বিশ্বাস বলেন, আমার সামনে আমার ছোট ভাই উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে তেড়ে আসলে আমি তাকে ছোট ভাই হিসেবে একটি থাপ্পর দিয়ে শাসন করেছি। আসলে এটা আমার করা ঠিক হয়নি।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাদকসেবী নিয়ে শিক্ষা সফরে যাওয়ার বিষয়ে বললে প্রধান শিক্ষক আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। লোকজন তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার কারণে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় শিক্ষা সফরে মাদকসেবী নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে শোকজ করা হয়। তবে শোকজের জবাবটি সন্তোষজনক হয়নি।
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari