এ বছর ভেজাল পেঁয়াজ বীজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার অনেক কৃষক। ইতোমধ্যে অসাধু বীজ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদনও করেছে কেঊ কেউ । ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট কৃষকেরা বীজের নির্ভরযোগ্যতা বাড়ানোর জোড়দাবী জানিয়েছে । এদিকে ভেজাল প্রতিরোধে কৃষি অফিস ও উপজেলা প্রশাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দেশের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলা মসলা জাতীয় ফসল হিসেবে খ্যাত। এ জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন সবার শীর্ষে। বছরের ৩৬৫ দিন এখানকার পেঁয়াজ ট্রাক যোগে দেশে বিভিন্ন জেলার চাহিদা মেটায়। এ বছর প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পেয়াঁজের আবাদ হয়েছে। এখানকার মাটিতে লালতীর ও তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজ ভালো হয়। লালতীরের বিঘা প্রতি ফলন ৮০-৯০ মন এবং তাহেরপুরী ৫৫-৬০ মণ পর্যন্ত হয়ে থাকে। কোন কোন কৃষক তাদের সুবিধামত পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে। অধিকাংশ কৃষক বীজ ক্রয় করে চারা বানিয়ে ফসল ফলায়। বীজের বিষয়টি নির্ভর করে সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর। কোন বীজ বিক্রেতা বিশ্বাস ভঙ্গ করলে ঐ চাষীর বড় ধরনের লোকসানের বোঝা মাথায় চেপে বসে।
বহরপুর ইউনিয়নের ইকরজনা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আব্দুল কাদের মন্ডল জানায়, একই ইউনিয়নের ভররামদিয়া গ্রামের বেল্লাল ফকিরের নিকট হতে প্রতিকেজি ৫ হাজার টাকা দরে ৩ কেজি লাল তীর বীজ কিনে চারা দিয়েছি। চারাও ভাল এসেছিল কিন্তু বীজতলা ও ক্ষেতে চারা লাল হয়ে নষ্ঠ হয়ে গেছে। এ জমিতে বছরে ২টি ফলে পেঁয়াজ আর পাট। সারা বছর পেয়াজ বিক্রি করে সংসার চলে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি কৃষি অফিস হতে তদন্ত করে গেছে। এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
একই গ্রামের কৃষক আলাউদ্দীন ও নাজিমুদ্দীন মন্ডল জানায়, এলাকায় পেঁয়াজের বীজ না পাওয়ায় আমরা ৭ জন ফরিদপুর অঞ্চলে গিয়ে ৬ হাজার টাকা দরে ২৭ কেজি বীজ কিনে এনেছি। বীজ ভালো নয়। এ বিচার চাওয়ার জায়গা নেই। কৃষিবান্ধব সরকার আগামীতে আমাদের বীজের চাহিদা পূরন না করলে পেঁয়াজের আবাদ বাধ্য হয়ে বন্ধ করতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানায়, সরকার এ বছর হতে উচ্চ ফলনশীল বীজের উপর কাজ করছে। সরকারের লক্ষ্য অল্প জায়গায় অধিক উৎপাদন করা। আর ভেজাল সার, কীটনাশক ও বীজের উপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ হাসিবুল হাসানকে সাথে নিয়ে এ পর্যন্ত ১০ টি দোকানের মালিককের মালামাল ধ্বংস , জরিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে কৃষককে মাল কেনার আগে যে সব বিষয় লক্ষ্যনীয় তার উপর সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। কৃষকের সাথে প্রতারনাকারীদের কোন ক্রমেই ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari