রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী যুবলীগের ৩মাসের আহবায়ক কমিটি পার করছে দুই দশক। জেলা কমিটির কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় ৫টি উপজেলা ও ৪২টি ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিগুলো রয়েছে স্থবির।

আহবায়ক ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি গুলো। দীর্ঘদিন পার হওয়ার পরও জেলা যুবলীগের কমিটি না হওয়ায় নতুন নেতেৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। ছাত্রলীগের অনেক নেতার ছাত্রত্ব চলে যাওয়ার পর যুবলীগের রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। এতে রাজবাড়ীতে নতুন নেতেৃত্বের সংকট তৈরি হচ্ছে আওয়ামী লীগে।

যুবলীগ ও সাবেক ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মো. জহুরুল ইসলামকে আহবায়ক এবং আবুল শিকদার ও জাহাঙ্গীর জলিলকে যুগ্ন আহবায়ক করে রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। কিন্ত দুই দশক পেরিয়ে গেলেও জেলা যুবলীগের কমিটি হয়নি। ৩মাসের রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটিও বিলুপ্ত হয়নি। আহবায়ক জহুরুল ইসলাম ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় বসবাস করেন।

এদিকে জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে পাংশা উপজেলা যুবলীগে ফজলুল হক ফরহাদকে আহবায়ক ও জামালউদ্দিন বিশ্বাসকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৩মাসের কমিটি রয়েছে বছরের পর বছর। বালিয়াকান্দি উপজেলায় রাসেল খান রিজুকে আহবায়ক ও তুহিনকে যুগ্ন-আহবায়ক করে ৩মাসের কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ বছর পেড়েয়ে গেলেও কমিটি হচ্ছে না অদৃশ্য কারণে। কালুখালী উপজেলায় মনিরুজ্জামান মহি চৌধুরীকে আহবায়ক ও রাকিবুল ইসলাম লাভলুকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৩মাসের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে আজও পর্যন্ত কমিটি হয়নি।

এদিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান শরীফ ও শওকত হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করা হয়। সেই কমিটি অনেক আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগে ইউনুছ মোল্লা সভাপতি ও নজরুল ইসলাম মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করা হয়। নজরুল ইসলাম মন্ডল গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলাম সালু ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছে। তবে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পুনরায় কমিটি হচ্ছে না।

এদিকে পাংশা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক ফরহাদ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাংশা পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইউনুছ মোল্লা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্য প্রার্থীর নির্বাচন করায় গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি রেজুলেশন করে তাকে বহিস্কারের সুপারিশ পাঠায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে।

জেলা-উপজেলা যুবলীগে কমিটিগুলো স্থবির হয়ে যাওয়ায় জেলার ৪২টি ইউনিয়ন কমিটি গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কমিটি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে জেলায় যুবলীগের নেতেৃত্ব সংকটে ভুগছে।

রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক মো. আবুল হোসেন শিকদার জানান, অনেক বার জেলা যুবলীগের কমিটি করতে চেয়েছি। তবে নানা কারণে কমিটি করতে পারিনি।

রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের এই যুগ্ন-আহবায়ক অপকটে স্বীকার করে জানান, জেলা যুবলীগের কমিটি দীর্ঘদিনে না হওয়ায় নেতেৃত্বে সংকটে পরেছে “রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী যুবলীগ”। এর মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “মাই ম্যান” রাজনীতি করার কারণে রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের কমিটি দীর্ঘদিনেও হচ্ছে না।

গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এমএ বাতেন জানান, সুনামের সাথে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যুবলীগের রাজনীতি করবো। কিন্ত অদৃশ্য কারণে জেলা যুবলীগের কমিটি হচ্ছে না। যে কারণে উপজেলার যুবলীগের কমিটিগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুনরায় কমিটি করতে পারছে না। এদিকে দীর্ঘদিনে উপজেলা-ইউনিয়ন গুলো কমিটি না হওয়ায় যুবলীগের রাজনীতি স্থবির হয়ে পরেছে।