রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে অগ্নিদগ্ধ স্কুলছাত্র নিতুন সরকার (১৪) আর নেই। ৬দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে সোমবার ভোর ৪ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিতুনের বাবা নিমাই সরকার কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আগুনে নিতুনের শরীরের ৪৪ শতাংশ গভীরভাবে পুড়ে যায়। এতে কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নিতুন লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার বাসিন্দা নিমাই সরকার আরো জানান, তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা থানায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ব্রাকে চাকরি সূত্রে তার স্ত্রী কাঞ্চন সরকার তাদের একমাত্র সন্তান নিতুনকে নিয়ে বিগত ৪ বছর ধরে গোয়ালন্দ পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের জনৈক হাসেম বেপারীর বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত ২৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪ টার দিকে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট হতে ওই বাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি। ভিডিওতে দেখেছি এলাকার লোকজন অনেক কষ্ট করে দেয়াল ভেঙে ঘরে আটকে পড়া আমার ছেলেকে উদ্ধার করে। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা বিফলে গেল। আমার ছেলটা মরেই গেল।
জানা গেছে, ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া দীনবন্ধুর ঘর থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন আশপাশের মোট চারটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে আরো দগ্ধ হয়েছেন ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোমা বেগম (৪০) এবং অজ্ঞাতনামা আরো একজন। আগুনের তাপ ও ধোয়ায় সোমা বেগমের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়া স্থানীয় কয়েকজন বলেন, তারা অন্য কোন উপায় না দেখে দেয়াল ভেঙে ভেতর থেকে নিতুনকে উদ্ধার করে। কিন্তু ততক্ষণে সে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়ে যায়। তারা অভিযোগ করে বলেন, বাড়িটি অনেক বড়। বাড়ির মালিকসহ অনেক ভাড়াটিয়া ওই বাড়িতে থাকেন। কিন্তু বাড়িতে প্রবেশের জন্য একটি মাত্র লোহার দরজা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাড়ির মালিক হাসেম বেপারীর মেয়ে হামিদা খাতুন বলেন, তাদের বাড়িটি নির্মাণের সময় সীমানা জটিলতা ছিল বলে তখন পাশ দিয়ে বিকল্প দরজা করা সম্ভব ছিলনা। এখন সে জটিলতা নেই। বিকল্প একটি দরজা তারা নির্মাণ করবেন।
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের টিম লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সরকারি কামরুল ইসলাম কলেজ সংলগ্ন সড়কের মধ্যে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় এবং সেখানে অপরিকল্পিত একটি ভবনের দেয়ালের জন্য আমাদের অগ্নি নির্বাপন গাড়ি ঘটনাস্থলেই পৌঁছাতে পারেনি। পরে ফিতা টেনে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। হাসেম বেপারীর বাড়িটিও অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari