দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাট। এই লঞ্চ ঘাট ব্যবহার করে দক্ষিণ পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষ রাজধানীমুখি হয়। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ বিকল দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সংযোগ সেতু বিকল থাকার কারণে ধান শুকানো হচ্ছে। সারাবছর অকেজো থাকলেও ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে চলছে জোড়াতালি। লঞ্চ ঘাট জড়াজীর্ণ অবস্থায় থাকার কারণে যাত্রী দুর্ভোগ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করছেন ঘাট সংশ্লিষ্টরা। দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট মেরামতকারী ঠিকাদার রাশেদ আহমেদ জানান, দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট চলাচলের উপযোগি করতে হলে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে। হাতে সময় না থাকায় ঈদ উপলক্ষে জরুরী ভিপ্তিতে দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে। এই রোজার মাসে কাজ করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। সময় নিয়ে এই কাজ করলে অনেক ভাল হতো।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, গত বর্ষায় পদ্মা নদীর ভাঙনে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ভেঙ্গে যায়। সেই থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে কোন রকম সচল রাখা হয়েছে। দীর্ঘ ৮মাস কেঁটে গেলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট মেরামত করার কোন উদ্যোগ নেয়নি। তবে সামনে ঈদ উপলক্ষে লোক দেখানোর জন্য জোড়াতালি চলছে। তিনি দুঃখ করে বলেন, এই মেরামত আরও ৬/৭ মাস পূর্বে করতে পারতো। কিন্ত অদৃশ্য কারণে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ২০ জন শ্রমিক দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ঈদের পূর্বে মেরামত করার জন্য টানা কাজ করছে। নির্মানাধীন একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলমান এই কাজ করতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে। তবে ঈদের পূর্বে লঞ্চ ঘাট ব্যবহারকারী যাত্রীদের সুবিধার্থে দিনরাত কাজ করা হচ্ছে।

লঞ্চ ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে মোট ৩৩টি ছোট বড় লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে ৭টি এমএল ও ২৬টি এমভি লঞ্চ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এমভি অনন্যা, এমভি অনিকা-০১, এমভি অনিকা-২, এমভি ব্লাকবার্ড, এমভি বরকত, এমভি মোস্তফা, এমভি তিতাস, এমভি বোয়ালী, এমভি শাপলা, এমভি নিপু-১, এমভি বিদুৎ এমভি চিসতিয়া এবং এমএল খেয়া, এমএল সুজন সহ মোট ১৬টি লঞ্চ একটি গ্রুপ এবং এমভি নাবিল-০১, এমভি নজির, এমভি তাজমহল, এমভি রেজুয়ান, এমভি আরিচা, এমভি টুম্পা, এমভি খন্দকার, এমভি পর্বত, এমভি মিতারা, এমভি ফ্লাইবার্ড, এমভি সলিমাবাদ, এমভি রুনা ও এমএল নার্গিস, এমএল ফাতেহানুর, এমএল মিজানুর, এমএল দৌলত, এমএল টুম্পা-০২। সহ মোট ১৭টি লঞ্চ। পর্যায়ক্রমে এই লঞ্চগুলো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে চলাচল করেন। তবে একটি বাতাস থাকলে এমএল লঞ্চগুলো বন্ধ রাখা হয়।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ব্যবহার করে চলাচলকারী একাধিক যাত্রী বলেন, এই বিকল হয়ে যাওয়া লঞ্চ ঘাট আরও ৫/৬ মাস পূর্বে মেরামত করতে পারতো। কিন্ত অবহেলার কারণে বিকল হয়ে পরে থাকা দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট দীর্ঘদিনেও মেরামত হয়নি। ঈদের পূর্বে মেরামত করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তারা বলেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থে নয়, ব্যক্তি স্বার্থে এমন উন্নয়ন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর সহকারী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম জানান, বিকল হয়ে পরে থাকা দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সংযোগ সেতু মেরামত করা হচ্ছে। আশাকরি ঈদের পূর্বে মেরামত কাজ শেষ হবে।