তথ্যের বিস্ফোরণে দিশেহারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। প্রতিদিনই বাড়ছে সত্য মিথ্যার লড়াই। তবে এই মাধ্যমগুলোর অপব্যবহারের ফলে ভুল, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যার ক্ষতিকর প্রভাব কেবল ব্যক্তি নয়, বরং গোটা জাতি ও রাষ্ট্রের ওপর পড়ে।
ভুল তথ্য প্রচারের পেছনে রয়েছে ভাইরাল হওয়ার প্রবণতা, অর্থ উপার্জনের লোভ, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল কিংবা অজ্ঞতা। কখনো কখনো গণমাধ্যমও বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই ভুল তথ্য প্রচার করে থাকে। আবার কেউ কেউ জেনে-বুঝে নিজের আদর্শিক, রাজনৈতিক বা বাণিজ্যিক স্বার্থে সত্যকে এড়িয়ে যান। এর ফলে শিক্ষা, অর্থনীতি, সামাজিক যোগাযোগ, এমনকি আইনশৃঙ্খলার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এই সমস্যার সমাধানে তথ্য চোখে পড়লেই তা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে যাচাই করে তবেই শেয়ার করা উচিত। যদি প্রমাণিত হয় যে কোনো তথ্য মিথ্যা, গুজব বা ক্ষতিকর, তাহলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (ইঞজঈ) সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কাছে রিপোর্ট করা। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ করে এবং তা দ্বারা মানহানি, বিশৃঙ্খলা বা সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৩ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা ৩ লাখ টাকা জরিমানা, বা উভয় দন্ড হতে পারে। সুতরাং মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, ইউটিউবার কনটেন্ট নির্মাতা ও সাধারণ ইউজারদের উচিত ভুল তথ্য না ছড়িয়ে গুজব প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহের লক্ষ্যে সরকারি বিজ্ঞপ্তি ও ভুয়া খবর সম্পর্কিত শিক্ষামূলক কনটেন্ট প্রচার করা যেতে পারে, যাতে জনগণ বিভ্রান্ত না হয়।
সরকার ও নাগরিকের সচেতনতাই পারে তথ্য বিভ্রান্তির দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে। কারণ একটি গুজব পুরো সমাজকে নাড়িয়ে দিতে পারে, সৃষ্টি হতে পারে অরাজকতা । জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভুল তথ্য রোধ এখনই প্রয়োজন।
লেখক: শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা।