ঈদুল-ফিতরের বাকী ৮দিন। এখনই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে অতিরিক্ত যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিসি এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের ঈদ প্রস্তুতির কোন নতুনত্ব চোখে পরছে না। বরং বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দুইটি রোরো (বড়) ফেরি বিকল রয়েছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় ঘাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এবং ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২১টি ছোট বড় ফেরি ও ২১টি লঞ্চ চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছে ঘাট সংশ্লিষ্টরা। কিন্ত ঈদের ঘরমুখি যাত্রীদের চাপ বাড়লেও আজও বৃদ্ধি করা হয়নি কোন ফেরি। বরং এই নৌরুটের দুইটি রোরো (বড়) ফেরি বিকল হয়ে পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। এবং চলছে ১৭ ফেরি। যা যানবাহন পারাপারের তুলনায় কম।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ৩৩টি ছোট লঞ্চ চলাচল করে। এই দুই নৌরুটে পর্যাক্রমে ১৬ এবং ১৭টি করে লঞ্চ চালানো হয়। ঈদের বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আমাদের কোন প্রকার অতিরিক্ত লঞ্চ নেই। তবে রাতে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে। সেই লঞ্চ গুলো রাতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া বহরে যোগ হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্য চৌহান জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের বহরে নতুন কোন ফেরি এসে যোগ হয়নি। বরং বর্তমানে এই নৌরুটের দুইটি রোরো বড় ফেরি বিকল হয়ে পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, দৌলতদিয়া পারে ৭টি ঘাটের মধ্যে ৩টি ঘাট বিকল রয়েছে। মাত্র ৪টি ফেরি ঘাট সচল রয়েছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলরত একাধিক যানবাহন চালক জানান, ঘাটের দুর্ভোগ শেষ হয়েও হচ্ছে না। ঈদে এই দুর্ভোগ আরও কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। তারা বলেন, পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি আন্তরিকতা থাকলে কিছুটা যানজট সহনীয় অবস্থায় আসতে পারে। তবে এই নৌরুটে ফেরি বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।
আব্দুর রাজ্জাক নামের এক যাত্রী বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটের দুর্ভোগ অনেকটা কৃত্রিম। কারণ দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে দালাল চক্র ও সুবিধাভুগি চালকদের কারণে ফেরি ঘাটে নানা প্রকার অনিয়ম থাকায় দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়। যেমন পুলিশের সামনে যাত্রীবাহী পরিবহনের সামনে মটরসাইকেল রেখে পণ্যবাহী ট্রাক সামনে নেওয়ার চিত্র প্রতিদিনের, প্রতি মুহূর্তের। যে কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় ঘাটে প্রতিনিয়ত যানবাহনের সারি ও যাত্রী দুর্ভোগ হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপ-পরিচালক খালেদ নেওয়াজ দুইটি ফেরি বিকল থাকার কথা নিশ্চিত করে জানান, ঈদের পূর্বে এই নৌরুটের বহরে ২১টি ফেরি চলাচল করবে। এবং বিকল ফেরি মেরামত শেষে দ্রুত বহরে যুক্ত ও ঘাটগুলো মেরামত করা সম্ভব হবে। তিনি আরও জানান, ঈদের তিন দিন পূর্বে এবং পরে পন্যবাহী ট্রাক নদী পার করা বন্ধ থাকবে। যে কারণে এই নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে কোন প্রকার সমস্যা হবে না।