ভোরের স্নিগ্ধতা পেতে সূর্যের আলোয় ঝলমলে শিশির ভেজা ঘাস ও কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীত আসছে। শীতের আগমনী বার্তা পেয়ে খেজুর গাছ প্রস্তুতে কাজ শুরু করে দিয়েছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া উপজেলায় রাজশাহী হতে আগত গাছি। সবার মুখেই শোনা যায় খেজুরের রসের পিঠা না হলে শীত জমে না। শীতের আগমনে প্রকৃতি বদলাতে শুরু করেছে তার রূপ। প্রকৃতির এই স্নিগ্ধতার মাঝে সকাল সকাল হাতে ছ্যান, বাটাল নিয়ে, কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চেছে-ছুলে রস সংগ্রহের নলি বসানোর কাজ করতে দেখা যায় গাছিদের। গাছ প্রস্তুতির কয়েকদিন পরেই গাছে বাঁধানো হবে নানান পরিমাপের হাঁড়ি। এরপর চলবে রস সংগ্রহের কাজ। সেই রস থেকেই খেজুরের গুড়, গুড়ের পাটালি তৈরি করা হবে।
এসব এলাকার পাটালী গুড়ের সুনাম এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। এখনো এই গুড়ের কদর দেশ-বিদেশে রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছগুলোকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউপিতে অবস্থিত হোসেন মন্ডল পাড়া, ঈমান খাঁ পাড়া, তাহের কাজী পাড়া গাছিদের পাশাপাশি রাজশাহী হতে আগত গাছি রতন শেখ জানান, প্রায় এক যুগ ধরে আমি খেজুর গাছ ঝোড়া, রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীর কাজ করি। আরও ২০ থেকে ২৫ দিন পরে লাল পাটালী গুড়ের পাশাপাশি হাজারী গুড়ও পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, খেজুর গাছের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় এখন অনেক কমে যাওয়ায় রস ও গুড়ের দাম বাজারে অনেক চড়া। কিন্তু তার পরেও গুড়ের চাহিদা আছে অনেক।
তিনি আরও জানান "বাড়ির গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে শীত মৌসুমে খেজুর গাছ কাটতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এক কালীন হিসাবে গাছের মালিকদের কাছ থেকে খেজুর গাছ কিনে নেই। তারপর সবাই মিলে একসাথে বিভিন্ন গ্রামের কেনা গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। প্রতি বছরই আমরা গুড় বানাই। তবে আগের মতো এখন আর তেমন খেজুর গাছ নাই। রসও তেমন হয় না। গাছ কম থাকায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৫০০-৮০০ টাকা করে কিনে নিয়ে গাছ ঝুড়ে রস সংগ্রহ করি। রসের সাহায্যে লাল গুড়ের পাশাপাশি হাজারি গুড় তৈরি করি। এ বছর প্রায় ৮ জন মিলে শতাধিক গাছ প্রস্তুত করেছি। আশা করছি আর ১৫ দিন পর থেকেই রস সংগ্রহ শুরু করতে পারবো।
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari