রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে পানির মোটর চুরির অভিযোগ তুলে ঘর থেকে তুলে নিয়ে শাহিন শেখ (৩০) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ নির্মম ঘটনা ঘটে। নিহত শাহিন শেখ ওই গ্রামের দিনমজুর ও ভ্যানচালক জিন্নাত শেখের ছেলে। তার দুই শিশু কন্যা রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে মূল অভিযুক্তরা এখনও গ্রেফতার হয়নি।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তিন মাস আগে শ্যাম বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে একটি পানির মোটর চুরি হয়। সেই চুরির অভিযোগে গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) শ্যাম বিশ্বাসের ছেলে রাফিজুল ও তার পরিবারের সদস্যরা শাহিনকে মারধর করেন। মোবাইল চুরি কিংবা কোনো ভিডিও সংক্রান্ত প্রমাণ না পেলেও তাকে অভিযুক্ত করে নির্যাতন করা হয়। পরদিন নিরাপত্তার অভাবে শাহিন ঢাকা চলে যান।
এরপর স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি সালিশে মীমাংসার আশ্বাস দিলে, শাহিনের মা রাবেয়া বেগম তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাড়ি ফেরেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সালিশ হওয়ার কথা থাকলেও, তার আগেই রাফিজুল, রাসেল, সৌরভসহ ৭-৮ জন যুবক শাহিনকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যান। এরপর শ্যাম বিশ্বাসের বাড়িতে আটকে রেখে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শাহিনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শ্যাম বিশ্বাসের স্ত্রী রাহেলা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বাড়ির মোটর চুরি করেছে শাহিন। আবার আমার বৌমার ভিডিও করেছে। এজন্য আমার ছেলে ও অন্যরা তাকে মারধর করেছে।”
রাজবাড়ী সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, নিহত শাহিনের বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা থানার ভেতরে আমগাছের নিচে বসে আছেন। জিন্নাত শেখ বলেন, “আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই। সালিশে বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মিলেই মামলা করতে এসেছিলাম, কিন্তু শুনি আমার শ্যালক কালাম মোল্লা বাদী হয়ে মামলা করেছে। অথচ সে কিছু জানে না। আমি ন্যায়বিচার চাই।
মামলার বাদী শাহিনের মামা কালাম মোল্লা দাবি করেন, পুলিশ রাতে আমাকে থানায় নিয়ে আসে, কিছু কাগজে নাম লিখতে বলে। আমি কিছু না বুঝেই লিখেছি। মামলার ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, নিহতের মামা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, মূলত চুরির অভিযোগ থেকেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।”
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari