ট্রাফিক আইন প্রতিটি মূহর্তে ভঙ্গ হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাস, কাভার্ডভ্যান, পণ্যবাহী ট্রাক, লড়ি, অ্যম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার-মাক্রোবাস। তোয়াক্কা করছে কোন যানবাহন চালক। যে যেভাবে পারছে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন চিত্র দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের নিত্য দিনের। যেকারণে দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুমের পর থেকে ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১কিলোমিটার রাস্তা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে যানবাহনগুলো।
রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক ইন্সেফেক্টর (টিআই) তারক পাল জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে যে সকল যানবাহন ফেরিতে নদী পারাপার হয় সেগুলো ৩টি ক্যাটাগরিতে ফেরিতে উঠানামা করে। এর মধ্যে অ্যম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ী, প্রাইভেটকার-মাক্রোবাস এই প্রকার যানবাহনগুলোর কোন সিরিয়াল নেই। দৌলতদিয়া ঘাটে আসলে ফেরিতে উঠার জন্য ডান পাশ ব্যবহার করে চলে যাচ্ছে। তবে অ্যম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ী, প্রাইভেটকার-মাক্রোবাসের সংখ্যা অতিরিক্ত হলে এই রকল যানবাহনের বিশেষ একটি সিরিয়াল দেওয়া হয়। যাত্রীবাহী বাস, পচনশীল পন্যবাহী ট্রাক, লড়ি, কাভারভ্যান এর জন্য নির্ধারিত একটি সিরিয়াল রয়েছে এবং অপচনশীল পন্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, কুরিয়ার সার্ভিস এর জন্য একটি সিরিয়াল দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, ট্রাফিকের এমন আইন বাস্তবায়ন করার জন্য দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুমের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একাধিক সিসি ক্যামেরা। সার্বক্ষণিক একজন ট্রাফিক ইন্সেফেক্টর (টিআই), দুইজন সার্জেন, দুইজন কনেষ্টবল প্রতি ২৪ ঘণ্টায় দায়িত্ব পালন করেন। ক্ষেত্র বিশেষে দায়িত্বরত পুলিশের সংখ্যা কমানো ও বৃদ্ধি করা হয়। তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের সিসি ক্যামেরাগুলো ধুলার কারণে মাঝে মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। সিসি ক্যামেরাগুলো স্বার্বক্ষনিক সচল রাখতে পারলে এবং ক্যামেরাগুলো হাই রেজিরেশন করতে পারলে অনেক কাজে আসবে।
দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ট্রাফিক কন্টোল রুম থেকে মহাসড়কে ৪কিলোমিটার রাস্তা ৪ লেন রয়েছে। দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুম থেকে ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১কিলোমিটার মহাসড়কে রয়েছে বাইপাস সড়ক। সুতরাং ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন হলে ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়ক থেকে ৫কিলোমিটার রাস্তায় যানজট হওয়ার সম্ভবনা নেই। কিন্ত প্রতিনিয়ত দেখা যায়, এই ৫কিলোমিটার পর্যন্ত ফেরি ঘাটের প্রধান যানজট।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দৌলতদিয়া দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের নিয়ম ভেঙ্গে যানবাহনগুলো পিছন থেকে সামনে নেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুম থেকে ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তায় শুধু ট্রাকের রয়েছে ৩/৪টি সারি। কোন কোন জায়গায় এরও অধিক সারি রয়েছে। পল্টুনে ফেরি ভেরানোর আগে যানবাহনগুলো দিয়ে সংযোগ সড়ক ও পল্টুনে অসংখ্য যানবাহন থাকে। এসকল যানবাহন সংযোগ সড়ক ও পল্টুনে পূর্বে থেকে থাকায় আনলোডের যানবাহন গুলোর অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ফেরিতে লোড-আনলোড হয়।
এভাবে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় ৩শতাধিক চিহ্নত দালাল রয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থানরত দালালদের বৈধতা দিচ্ছে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া যানবাহনের মালিকরা। এসকল মালিক অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বেতন ভুক্ত কর্মচারী রেখেছেন। দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থানরত মুন্সি শাহাদত হোসেন নামের এক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি “জননী এক্সপ্রেস পার্সেল সার্ভিস” এর নিয়োগপত্র বের করে দেখান। নিয়োগ পত্র সূত্রে দেখা যায়, তার বাড়ী গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি। তিনি “জননী এক্সপ্রেস পার্সেল সার্ভিস” কাভারভ্যান গুলো ফেরি পার করার জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত রয়েছেন।
দালাল ছাড়া ফেরির টিকিট মেলে না এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপসহকারী পরিচালক খালেদ নেওয়াজ জানান, কথাটি সম্পন্ন মিথ্যা। যে কেউ টিকিট কাউন্টারে এসে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন। সে দালাল নাকি যানবাহন চালক আমাদের নিশ্চিত করার দায়িত্ব নয়।
প্রকাশক : ফকীর আব্দুল জব্বার, সম্পাদক : ফকীর জাহিদুল ইসলাম, সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ২২ নং ইয়াছিন স্কুল মার্কেট (২য় তলা), হাসপাতাল সড়ক, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী মোবাইল: 01866962662
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari